উদ্ধব ঠাকরে।
মহারাষ্ট্রের করোনা-সঙ্কট সামাল দিতে উদ্ধব ঠাকরে ব্যর্থ, এই অভিযোগ তুলে গত কালই রাজ্যপালের কাছে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানিয়ে এসেছেন বিজেপি নেতা নারায়ণ রাণে। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা সেই পথে হাঁটবেন কি না— তা নিয়ে জল্পনার মধ্যেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর কথায় আজ স্পষ্ট হল, ফাটল ধরেছে মহারাষ্ট্রের শাসক জোটে।
মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে রাহুল আজ কংগ্রেসের দায় ঝেড়ে ফেলে বলেন, “সরকার চালানো ও সমর্থন করার মধ্যে ফারাক রয়েছে। আমরা মহারাষ্ট্র সরকারকে সমর্থন করছি। কিন্তু আমরা আসল সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। আমি এখানে একটা ফারাক রাখতে চাই।”
পওয়ারের সঙ্গেও উদ্ধবের মতভেদ দেখা গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেই জল্পনা উস্কে দিয়ে পওয়ার কাল প্রথমে রাজ্যপাল ভগত সিংহ কোশিয়ারীর সঙ্গে ও পরে মাতোশ্রী-তে গিয়ে উদ্ধবের সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, উদ্ধব মহারাষ্ট্রে লকডাউন তুলতে চাইছেন না। পওয়ারের মত, ধাপে ধাপে লকডাউন তোলা দরকার। মাতোশ্রীর বৈঠকে জোট-শরিক কংগ্রেসের কোনও নেতা হাজির ছিলেন না। শিবসেনা-এনসিপির সঙ্গে ‘মহারাষ্ট্র বিকাশ আগাড়ি’ জোট গড়ে সরকারে যাওয়া নিয়ে রাজ্যের কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন ছিল প্রথম থেকেই। এখন তাঁদের ক্ষোভ, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব। আর সরকারে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন পওয়ার! মাঝ থেকে কংগ্রেস কোণঠাসা।
আরও পড়ুন: কৌশল স্পষ্ট করুন মোদী, দাবি রাহুলের
সত্যিই কি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে? আজ রাত পর্যন্ত বিজেপি নেতারা বলছেন, মহারাষ্ট্রে করোনা-পরিস্থিতি এতই খারাপ যে সেটা করলে পুরো দায় কেন্দ্রের ঘাড়ে চলে আসবে। তার বদলে উদ্ধবকেই মুখ্যমন্ত্রী রেখে, তাঁকে ব্যর্থ প্রমাণ করাটা বুদ্ধিমানের কাজ। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীসের কথায়, ‘‘আমরা সরকার ফেলতে চাই না। কিন্তু রাজ্যের নেতৃত্বে কর্তৃত্ব প্রয়োজন। আশা করব, মুখ্যমন্ত্রী সাহসী সিদ্ধান্ত নেবেন।” জোট-সঙ্কট নিয়ে দেবেন্দ্রের মন্তব্য, “কেউ এই সরকারকে দুর্বল করছে না। সরকার নিজের বোঝাতেই পড়ে যাবে।”
আজ রাহুলের মন্তব্যের কিছু আগেই পওয়ার বলেছিলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র সরকারের কোনও বিপদ নেই। সরকারের শরিকদের মধ্যেও কোনও মতভেদ নেই। সব বিধায়ক সরকারের সঙ্গে রয়েছেন।’’ রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর বৈঠককেও ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলে উড়িয়ে দেন পওয়ার। কিছু পরেই রাহুলের মন্তব্যে ফাটল স্পষ্ট হয়। অবস্থা সামলাতে পওয়ার-কন্যা সুপ্রিয়া সুলের যুক্তি, “রাহুল ঠিকই বলেছেন। জোট সরকারে কেউ আলাদা করে সিদ্ধান্ত নেয় না।” যদিও মজিদ মেমনের মতো এনসিপি নেতাদের মতে, রাহুল ঠিক বলেননি। কংগ্রেস বাইরে থেকে সমর্থন করছে না। সরকারে রয়েছে। এনসিপির মন্ত্রী নবাব মালিকের অভিযোগ, বিজেপিই রাষ্ট্রপতি শাসনের গুজব ছড়িয়ে সরকারকে দুর্বল করতে চাইছে।