মুকুল রায়। —ফাইল চিত্র।
১৮১ নম্বর সাউথ অ্যাভিনিউ। নয়াদিল্লির এই বাংলোই গত প্রায় দেড় দশক দিল্লিতে মুকুল রায়ের ঠিকানা। কিন্তু এ বার সেই আবাসন ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি হল। রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবেই এই বাংলো পেয়েছিলেন মুকুল। কিন্তু রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করলেও বাংলো ছাড়তে হয়নি। আইনের ফাঁক দিয়ে বিজেপি-ই মুকুলকে দিল্লির আস্তানা রক্ষায় সাহায্য করেছিল। এখন সেই বিজেপি-ই মুকুলকে উৎখাত করতে চাইছে। বাংলো খালি করতে চিঠি পাঠিয়েছে সংসদের আবাসন কমিটি। তবে সেই চিঠি মুকুল নন, পেয়েছেন বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত।
মুকুলকে বাংলো খালি করার জন্য কেন স্বপনকে নোটিশ দেওয়া হল তা জানতে হলে একটু পিছনে যেতে হবে। ২০০৬ সালে সাংসদ হন মুকুল। তৃণমূলের রাজ্যসভা সদস্য হিসেবেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ও’ব্রায়েনের পাশের বাংলো মুকুলের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি-তে যোগদানের আগে মুকুল রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দেন। সেই সময়েই মুকুলের বাংলো পাওয়ার অধিকার চলে যায়। কিন্তু তখন বিজেপি-র ‘ঘরের ছেলে’ মুকুলের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করে বিজেপি। দিল্লিতে দলের রাজ্যসভার সাংসদ স্বপনের নিজস্ব বাড়ি থাকায় তিনি প্রাপ্য বাংলো নেননি। রাজ্যসভা থেকে মুকুল ইস্তফা দেওয়ার পরে খাতায় কলমে দেখানো হয় মুকুল ওই বাংলোয় স্বপনের অতিথি হিসেবে (গেস্ট অ্যাকোমেডশন) থাকেন।
১৮১ নম্বর সাউথ অ্যাভিনিউ। এই বাংলোই গত প্রায় দেড় দশক দিল্লিতে মুকুল রায়ের ঠিকানা। —ফাইল চিত্র।
গত লোকসভা নির্বাচনের আগে মুকুল ওই ঠিকানায় ভোটার কার্ডও বানান। ওই ঠিকানা থেকেই দিল্লিতে ভোট দেন। তবে গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে প্রার্থী হতে হবে জানার পরে তিনি ফের কাঁচড়াপাড়ার বাড়ির ঠিকানায় ভোটার হন। গত ১১ জুন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরের দাবিতে সরব হয়েছে। মুকুলের দিল্লির বাংলোর সামনে থেকে মোদী, শাহদের ছবি সরিয়ে বসে গিয়েছে তৃণমূলের ব্যানার। তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের ছবি। এই পরিস্থিতিতে মুকুলকে এ বার বাংলো ছাড়া করতে তৎপর বিজেপি। জানা গিয়েছে, সংসদের আবাসন কমিটির চিঠি পেয়েই মুকুলকে বাংলো খালি করতে বলেছেন স্বপন।