—প্রতীকী চিত্র।
আগামী বৃহস্পতিবার থেকে হরিয়ানায় শুরু হচ্ছে বিধানসভা নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া। কিন্তু মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে হরিয়ানার প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করে উঠতে পারল না বিজেপি। সূত্রের মতে, গোষ্ঠীকোন্দলের পিছনে অন্যতম কারণ হলেন বিজেপির টিকিটে পরপর তিন বার জিতে আসা (টানা মোট পাঁচ বার) গুরুগ্রামের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রাও ইন্দ্রজিৎ সিংহ। দক্ষিণ হরিয়ানাতে একাধিক আসন তাঁর অনুগামীদের ছেড়ে দিতে হবে, এই দাবিতে অনড় রয়েছেন তিনি।
তৃতীয় মোদী সরকারে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ও প্রকল্প রূপায়ণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার থেকেই বেসুরে বাজতে শুরু করেছেন হরিয়ানার দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী রাও বীরেন্দ্র সিংহের ছেলে তথা আহিরওয়াল সমাজের নেতা ইন্দ্রজিৎ। পূর্ণ মন্ত্রিত্ব না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ইন্দ্রজিৎ বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তাঁকে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার বার্তাও দেন। যদিও বিজেপি গোড়া থেকেই বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিংহ সাইনিকে সামনে রেখে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই অবস্থায় ইন্দ্রজিৎকে প্রকাশ্য সভায় একাধিক বার বলতে শোনা গিয়েছে, হরিয়ানায় জয়ের চাবিকাঠি আহিরওয়াল সমাজের হাতেই। অন্তত ডজন খানেকের বেশি আসনে কোনও দলের জেতা-হারা নির্ভর করে আহিরওয়াল সমাজের ভোটের উপরে।
আপাতত ইন্দ্রজিৎ দক্ষিণ হরিয়ানার অন্তত ১০টি আসনে নিজের পছন্দের প্রার্থী চেয়ে অনড়। সমস্যার সমাধানে গত কাল সদস্য সংগ্রহ অভিযান অনুষ্ঠানের পরে ইন্দ্রজিতের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অমিত শাহ ও জেপি নড্ডা। মূলত দক্ষিণ হরিয়ানার গুরুগ্রাম, রেওয়াড়ি, বাদশাহপুর, পটৌডি, সৌরেনা, নারনেল, বাওয়ালের মতো বিধানসভা আসনগুলিতে আহিরওয়াল সমাজের ভাল রকম প্রভাব রয়েছে। সেই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে ইন্দ্রজিৎ শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দর কষাকষি চালিয়ে যাচ্ছেন। হরিয়ানায় লোকসভা ভোটে সমসংখ্যক আসন পেয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেস। ফলে রাজ্যে বিজেপির অবস্থান যে বিশেষ ভাল নয়, সেই দেওয়াল লিখন অনেকটাই স্পষ্ট। এই আবহে ইন্দ্রজিৎকে চটানোর পক্ষপাতী নন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাতে দক্ষিণ হরিয়ানায় আহিরওয়াল ও যাদব অধ্যুষিত যে ২০টি আসন রয়েছে, তাতে ফল আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা। সূত্রের মতে, সমাধানের লক্ষ্যে ইন্দ্রজিতের অনুগামীদের জন্য ৫টি আসন ছাড়ার বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কাল সকালের মধ্যে ইন্দ্রজিৎকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যার ভিত্তিতে আগামিকাল প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করে দিতে চান তাঁরা।