—প্রতীকী ছবি।
মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে বারো বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় চলছে। এই আবহে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনায় বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা স্বরূপনগরের গ্রামে তরুণীর গলাকাটা দেহ উদ্ধার নিয়ে দিল্লিতে সুর চড়াল বিজেপি। তাদের অভিযোগ, মহিলাদের উপর পর পর অত্যাচার বুঝিয়ে দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা খারাপ। আর তৃণমূলের মতে, ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশের ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতেই বিজেপির এই কৌশল। তারা আরও বলছে, সীমান্ত লাগোয়া যে জমিতে তরুণীর দেহ মেলে, তার নজরদারির দায়িত্বে রয়েছে বিএসএফ। সুতরাং কেন্দ্রীয় বাহিনীও ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর স্বরূপনগরের সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের কাঁকরোল খেতে ওই তরুণীর দেহ মিলেছিল। তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার রাতে বিথারী এলাকা থেকে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম নেশার মোল্লা। তদন্তকারীরা জেনেছেন, নিহত তরুণী বাংলাদেশের বাসিন্দা। তিনি মুম্বইয়ে বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। সেখান থেকে বাংলাদেশের বাড়িতে ফিরছিলেন। সঙ্গে নগদ টাকা এবং গয়না ছিল। সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়ার জন্য পেশায় দালাল নেশারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। নেশার তাঁকে স্বরূপনগর সীমান্তে নিয়ে আসে। সেখানেই টাকা ও গয়না কেড়ে তরুণীকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। কেউ যাতে চিনতে না পারে সে জন্য মুখে ওড়না পেঁচিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়।
এ দিন ওই ঘটনার উল্লেখ করে দফায় দফায় পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সরব হন বিজেপি নেতা-সাংসদেরা। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালবীয়। সঙ্গে লেখেন, ‘এই হল পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ছবি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীরব।’ জোট শরিক রাহুল গান্ধী বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এর পরেও নীরব থাকবেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সঙ্গে জুড়েছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি এ বার নিন্দা করবেন? না কি ইন্ডিয়া-র বাধ্যবাধকতা মাঝখানে এসে দাঁড়াবে?’’
তার পরে প্রথমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি নিজের বাড়িতে এবং পরে দলের সদর কার্যালয় থেকে মুখপাত্র শাহজাদ পুনেওয়ালা পশ্চিমবঙ্গের ওই ঘটনা তুলে ধরে সরব হন। মীনাক্ষী পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেন, ‘‘২০২২ সালে ৪০ দিনের মধ্যে১৫টি ধর্ষণ হয়েছিল এবং সেই সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।’’
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘‘নিহত মহিলা বাংলাদেশি নাগরিক। সীমান্তের পাশেই মিলেছে তাঁর দেহ। বিএসএফের তো সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত দেখার কথা। কী ভাবে ওই মহিলা এলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকেই তার জবাব দিতে হবে।’’ রাজ্য পুলিশের পক্ষ নিয়ে তাঁর সংযোজন, ‘‘এক জন অজ্ঞাতপরিচয়ের দেহ নিয়ে তদন্ত শুরু করে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। পুলিশ ভাল কাজ করেছে।’’