মনোজ তিওয়ারি।—ছবি পিটিআই।
দিল্লি নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হওয়ার ব্যাপারে গোড়া থেকেই আশায় ছিলেন হর্ষ বর্ধন। তাঁকে টেক্কা দেওয়ার জন্য অরবিন্দ কেজরীবালকে দুষে যখন-তখন রাস্তায় নেমে পড়ছিলেন বিজয় গোয়েল। কখনও ‘জোড়-বিজোড়’-এর বিরোধিতা করে, কখনও দিল্লি দূষণের প্রতিবাদে। আশায় ছিলেন গৌতম গম্ভীরও। কিন্তু দূষণের বাজারে ইনদওরে জিলিপি খেতে গিয়ে গোল পাকিয়েছেন তিনি।
আজ সকালে এঁদের সকলকে টপকে বিজেপির পক্ষ থেকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী পদে নাম ঘোষণা হয়ে গেল মনোজ তিওয়ারির!
ঘোষণাটি অবশ্য অমিত শাহ বা বিজেপির কোনও আনুষ্ঠানিক মঞ্চ থেকে করা হল না। করলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। সামনেই দিল্লির ভোট। তার একটি প্রচারে গিয়ে পুরী বললেন, ‘‘মনোজ তিওয়ারির নেতৃত্বে আমরা বিধানসভা নির্বাচন লড়তে চলেছি। আর যতক্ষণ না তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করছি, ততক্ষণ থামব না।’’
মনোজ তিওয়ারি এখন দিল্লি বিজেপির সভাপতি। তাঁকে নিয়ে এমনিতেই দলের মধ্যে বিস্তর অসন্তোষ আছে। আরএসএসের একটি অংশ তাঁকে হঠাতে চাইছে। কাউকে মুখ করে ভোটে যাওয়া হবে কি না, তা নিয়েও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এর মধ্যে পুরীর মুখে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীর নাম ‘ঘোষণা’ হতেই সেটি লুফে নিল কেজরীবালের দল। তাঁর দলের নেতা রাঘব চাড্ডা বলেন, ‘‘বিজেপির এই সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। এ বারে ম্যাচটি হতে চলেছে অরবিন্দ কেজরীবাল বনাম মনোজ তিওয়ারির মধ্যে। মনে রাখবেন, এই মনোজ তিওয়ারিই জোড়-বিজোড়, মহিলাদের বিনা পয়সায় বাস সফরের বিরোধিতা করেছেন। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পক্ষেও সওয়াল করেছেন।’’
এমনিতেই দিল্লিতে রাজনৈতিক জমি এখন কেজরীর অনুকূলে বলে মনে করেন বিজেপি নেতৃত্ব। তার উপর সম্প্রতি হরিয়ানার মতো মহারাষ্ট্রেও সরকার গড়তে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। এই পরিস্থিতিতে হরদীপ পুরী একতরফা মনোজ তিওয়ারির নাম ঘোষণা করে বিজেপির মধ্যেই কোন্দল আরও বাড়িয়ে তুলেছেন। বাকি নেতারাও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে প্রশ্ন করছেন, ‘‘এ কী হল? কবে সিদ্ধান্ত হল?’’ অবশেষে সদর দফতরের ধমক খেতে হয় পুরীকে। ওই বক্তব্য খণ্ডন করতে বলা হয় তিওয়ারিকেও।
অগত্যা একটি টুইট করলেন মোদী-মন্ত্রী। বললেন, ‘‘দিল্লিতে বিজেপি জয়ের পথে। দল এখনও মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীপদে কারও নাম চূড়ান্ত করেনি। মনোজ তিওয়ারি দলের সভাপতি। তাঁর নেতৃত্বে দল উৎসাহের সঙ্গে কাজ করছে। আমি বলতে চেয়েছি, তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি জিতবে।’’ তিওয়ারিও জানালেন, ‘‘আমি তো সভাপতি। আমার দায়িত্ব দলকে সরকার তৈরি করে দেওয়া।’’