—প্রতীকী ছবি।
হরিয়ানা ভোটে মুখোমুখি লড়াই বিজেপি এবং কংগ্রেসের। টানা দশ বছর সরকারে থাকার ফলে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া জনতার ক্ষোভ সামলে, দলিত মন জয় করতে আসরে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যে বেকারত্ব বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিও এ বার হরিয়ানার ভোটে নির্ণায়ক হয়ে উঠতে চলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অন্য দিকে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে নিজেদের আসন সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ করে ফেলার পরে প্রথম আয়োজিত ভোটেই বিজেপির বিরুদ্ধে নতুন শক্তি নিয়ে প্রচারে নেমেছেন রাহুল গান্ধী।
গত কাল প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘দলিত বিরোধী’, ‘উন্নয়ন বিরোধী’, ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মগ্ন’ রাজনৈতিক দল হিসাবে আক্রমণ করার পর আজও বাগযুদ্ধ অব্যাহত। মোদী ‘নমো অ্যাপ’-এর মাধ্যমে হরিয়ানার বিজেপি কর্মীদের চাঙ্গা করতে চেয়ে কংগ্রেসকে বিঁধেছেন। তাঁর কথায়, “আমাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছে, তাদের গোটা ভিতটাই তৈরি মিথ্যে দিয়ে। তাদের প্রতিটা কথা মিথ্যা, বক্তব্যের মাথামুণ্ডু নেই। পরিবেশকে বিষাক্ত করাটাই একমাত্র লক্ষ্য। আগে লম্বাচওড়া প্রতিশ্রুতির যে মাইক তারা ব্যবহার করত, তা এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে।” অন্য দিকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী আজ রাজ্যে এক নির্বাচনী প্রচারে মোদীকে নিশানা করে বলেছেন, “বিজেপি সরকার ধারাবাহিক ভাবে দেশের কর্মসংস্থান ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করেছে।” তাঁর দাবি, “কংগ্রেস বিপুল ভাবে জিততে চলেছে। একটা ঝড় আসছে। তার পর আমরাই সরকার গড়ব।” তিনি বিজেপি সরকারকে নিশানা করে বলেছেন, শুধু মাত্র তাদের জন্যই হরিয়ানার বহু যুবাকে জমি বেচে অথবা চড়া সুদে ঋণ নিয়ে বিদেশে চলে যেতে হয়েছে কাজের জন্য। তাঁরা দেশে ফিরতে চাইলেও পারছেন না।’’ রাহুল বলেন, সম্প্রতি আমেরিকায় গিয়ে এমন অন্তত ২০ জন হরিয়ানাবাসীর সঙ্গে দেখা
হয়েছে তাঁর।
মোদীর কথায়, “গত দশ বছরে হরিয়ানার বিরোধী হিসাবেও ব্যর্থ কংগ্রেস। সাধারণ মানুষের সুখদুঃখের থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছে এই দল।” কৃষক আন্দোলন হরিয়ানা বিধানসভা ভোটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠতে পারে, এই আশঙ্কায় মোদীর দাবি, “কংগ্রেস জমানায় শস্য নষ্ট হলে কৃষকেরা নামমাত্র ক্ষতিপূরণ পেতেন।” ‘পরচি’ এবং ‘খরচি’ (সুপারিশ এবং উৎকোচ) ছাড়াই হরিয়ানার যুবকরা এখন কাজ পাচ্ছেন বলে দাবি মোদীর।
অন্য দিকে রাহুল গান্ধীর বক্তব্য, বিজেপিকে হটিয়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে এমন ভাবে কর্মসংস্থানের দিশা তৈরি করা হবে, যাতে স্থানীয় যুবদের ‘বাধ্য হয়ে’ রাজ্য বা দেশের বাইরে যেতে না হয়। তাঁর অভিযোগ, মোদী এখানে একচেটিয়া ব্যবস্থা কায়েম করেছেন। তাঁর বন্ধু অম্বানী আর আদানিকেই যাবতীয় সাহায্য করছেন। কোনও কৃষকের ঋণ মকুব হয়নি, অথচ ওই দুই শিল্পপতির ১৮ লক্ষ কোটি টাকা মকুব করে দেওয়া হয়েছে। গত কাল মোদী কংগ্রেস তথা গান্ধী পরিবারকে ‘সংরক্ষণ বিরোধী’ হিসাবে তুলে ধরেছিলেন। আজ রাহুলের জবাব, জাতভিত্তিক জনগণনার প্রতিশ্রুতিতে তিনি অটল।