বিপ্লব কুমার দেব।
ত্রিপুরা সরকারের স্বাস্থ্য-শুল্ক সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি চূড়ান্ত কিছু নয় বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব।
গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকারের তরফে ১০ পাতার ওই বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়। তাতে দেখা যায়, কার্যত সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রতিটি ক্ষেত্রে ‘ফেলো কড়ি, মাখ তেল’ নীতি নিয়েছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। অন্ত্যোদয় শ্রেণি ছাড়া আর সব ক্ষেত্রে সরকারি পরিষেবার জন্য মূল্য নির্ধারিত হয়েছে। দারিদ্র সীমার উপরে থাকা মানুষদের ক্ষেত্রে তো বটেই, রেহাই মেলেনি ‘প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড’ শ্রেণিভুক্তেরও। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা আসন, বনমালীপুরে এক দিনমজুরের অর্থের অভাবে অস্ত্রোপচার স্থগিত হয়ে যায়। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুকে হাতিয়ার করেন বিরোধীরা। শাসক দলেও দেখা দেয় অসন্তোষ। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য বিপ্লববাবুকে চিঠি দেন।
চাপের মুখে মুখ্যমন্ত্রী আজ সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ‘‘এখনও সঠিক তালিকা বের হয়নি।’’ তাঁর দাবি, সরকারের মধ্যে এই নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই খসড়া তালিকা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। ওই বিজ্ঞপ্তিকে মুখ্যমন্ত্রী ‘ইন প্রিন্সিপল নোটিফিকেশন’ বলে দাবি করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই তালিকায় প্রচুর অদল-বদল করা হবে। নতুন ‘অপারেশনাল’ বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়া পর্যন্ত কোনও শুল্ক নতুন করে ধার্য করা হবে না।’’
বিপ্লববাবুর দাবি, ‘‘যাঁর মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে, সেই পরেশ মোদকের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। সেই কারণেই অস্ত্রোপচার করা যায়নি। এর সঙ্গে টাকাপয়সার যোগ নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি বিপ্লববাবু এ দিন বিরোধী ও সংবাদমাধ্যমকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সরকারকে হেয় করার জন্যই এই প্রচার।’’
তবে পরেশবাবুর মৃত্যুর কারণ তদন্ত করে দেখার জন্য জিবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কমিটি গড়েছেন। হাসপাতাল সুপার শঙ্কর চক্রবর্তী জানান, আগামী কাল রিপোর্ট পাওয়া যাবে। প্রশ্ন উঠেছে, সেই রিপোর্ট আসার আগেই মুখ্যমন্ত্রী ‘উচ্চ রক্তচাপ জনিত কারণ’ জানান কী করে?