সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
বিলকিস বানোর ধর্ষকদের ‘সাজার মেয়াদ শেষের আগে’ মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের হওয়া আবেদনের আগামী মঙ্গলবার থেকে শুনানি শুরু করবে সুপ্রিম কোর্ট। শনিবার শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, বিচারপতি আজয় রস্তোগী এবং বিচারপতি বেলা ত্রিবেদীর বেঞ্চে ধর্ষিতা বিলকিসের আবেদনের শুনানি হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে বিলকিস-কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। তার আগে, মুক্তির জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীরা। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গুজরাত সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল আদালত। বিজেপি পরিচালিত গুজরাত সরকার ১১ অপরাধীর মুক্তির পক্ষে সওয়াল করে সুপ্রিম কোর্টের সবুজ সঙ্কেত পায়।
এর পরই গোধরা জেল থেকে ১১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের ওই অপরাধীদের মুক্তির পরে শাসক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা সংবর্ধনা দেন বলেও অভিযোগ। ওই মুক্তির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তা পুনর্বিবেচনার জন্য বিলকিসের আইনজীবী শোভা গুপ্তা প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের পিটিশন বেঞ্চে গত ৩০ নভেম্বর আবেদন জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র-সহ আরও কয়েক জন পৃথক ভাবে বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গোধরা-কাণ্ডের পর গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসা চলাকালীন, ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। গ্রামের বাসিন্দা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে মারে হামলাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। তাঁর পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্যকে হত্যা করা হয়। এই অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বইয়ের সিবিআই আদালতে কঠোর সাজার পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। মামলা চলাকালীন এক জনের মৃত্যু হয়।