বিহারে সেতু বিপর্যয়। ছবি: সংগৃহীত।
একের পর সেতু ভাঙতে থাকায় অস্বস্তির মুখে বিহারের নীতীশ কুমারের সরকার। দু’সপ্তাহের মধ্যে ১২টি সেতু ভেঙে পড়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় অস্বস্তির মুখে পড়ে শুক্রবারই ১১ জন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করল বিহার সরকার। শুধু তাই-ই নয়, কোনও ঠিকাদার যদি দোষী সাব্যস্ত হন, নতুন সেতু নির্মাণের খরচ পুরোটাই তাঁকে বহন করতে হবে বলে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এক একের পর এক সেতু ভেঙে পড়ছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি ফ্লাইং স্কোয়াড গঠন করেছিল বিহার সরকার। শুক্রবার সেই স্কোয়াড সরকারকে রিপোর্ট দেয়। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, সেতু ভেঙে পড়ার নেপথ্যে রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারদের অনীহা এবং নজরদারির অভাব। আর সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরই বিহার সরকার এই ঘটনায় ১১ জন ইঞ্জিনিয়ারকে চিহ্নিত করে তাঁদের সাসপেন্ড করেছে।
জলসম্পদ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব চৈতন্য প্রসাদ ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁর দাবি, সেতুগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, সময় মতো তার নজরদারি চালাননি ইঞ্জিনিয়াররা। এমনকি, এই ঘটনার নেপথ্যে ঠিকাদারদের গাফলতিরও অভিযোগ তুলেছেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব। শেষ সেতুটি ভেঙেছিল বৃহস্পতিবার। বিহারের সারণ জেলায়। ফলে ১৭ দিনের মধ্যে ১২টি সেতু ভেঙেছে বিহারের বিভিন্ন প্রান্তে। গ্রাম উন্নয়ন দফতরের সচিব দীপক সিংহ বলেন, “আরারিয়াতে গত ১৮ জুন একটি সেতু ভেঙে পড়ে। কী ভাবে ভাঙল তার তদন্ত চলছে। চার ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ঠিকাদারদের পাওনা আটকে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলা পর্যন্ত তা বন্ধ রাখা হবে।”
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন বিহারে প্রথম সেতু ভাঙার খবর প্রকাশ্যে আসে। আরারিয়া জেলায় সেতু ভাঙার পর ২২ তারিখ সিওয়ানেও একই ভাবে নদীর উপর ভেঙে পড়ে একটি সেতু। এর পর ক্রমে পূর্ব চম্পারন, কিসানগঞ্জ, মধুবনি, মুজফ্ফরপুরে সেতু ভেঙেছে। ৩ জুলাই সিওয়ানে তিনটি সেতু এবং সারণে দু’টি সেতু ভেঙে পড়ে। বৃহস্পতিবার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন সারণের আরও একটি সেতু। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ইতিমধ্যে রাজ্যের পুরনো সেতুগুলি পর্যবেক্ষণের জন্য সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে কোন সেতু আগে মেরামত করা দরকার, তা-ও চিহ্নিত করতে বলেছেন।