নীতীশ কুমার এবং তেজস্বী যাদব— ফাইল চিত্র।
আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। রাত পোহালেই স্পষ্ট হবে, আগামী ৫ বছরের জন্য পটনার কুর্সি কার দখলে আসতে চলেছে। বিভিন্ন বুথ ফেরত সমীক্ষায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হলেও এনডিএ জোটের তুলনায় আরজেডি, কংগ্রেস, বামেদের ‘মহাগঠবন্ধন’ (মহাজোট)-কে একটু এগিয়ে রাখা হয়েছে। আর তার পর থেকেই মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদবকে ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজ্য জুড়ে।
সমীক্ষায় ‘ফোটো ফিনিশে’ ভাগ্যনির্ধারণের পূর্বাভাস দেওয়ার পরে ‘ঘর গোছানোর’ তৎপরতা শুরু হয়েছে কংগ্রেস শিবিরে, সোমবার রাতে দিল্লি থেকে পটনায় পৌঁছেছেন এআইসিসির দুই বিশেষ পর্যবেক্ষক রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা এবং অবিনাশ পাণ্ডে। উদ্দেশ্য, দ্রুত সদ্য নির্বাচিত বিধায়কদের একত্রিত করা। অতীতে মণিপুর এবং গোয়া বিধানসভা ভোটে সবচেয়ে বড় দল হওয়ার পরেও সরকার গড়তে কংগ্রেস ব্যর্থ হয়েছিল। সনিয়ার দলের বিধায়কদের একাংশের সমর্থনেই ওই দুই রাজ্যে বিজেপি সরকার গড়েছিল। বিহারে আর ‘চোরাশিকারের’ পুনরাবৃত্তি হতে দিতে চায় না কংগ্রেস।
ঘটনাচক্রে, সোমবারই ছিল তেজস্বীর জন্মদিন, আরজেডির প্রতিষ্ঠাতা লালুপ্রসাদের ছেলেকে সংবর্ধনা জানানোর ধুম পড়েছিল পটনা জুড়ে। আরজেডি দফতরে ছিল ভিড়। আর সেই ভিড়ের ‘মুড’ বার্তা দিয়েছে ‘যুদ্ধ জয়ের’ আগাম উল্লাসের। শহরে হোর্ডিং ঝুলিয়ে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ‘ভাবি মুখ্যমন্ত্রী’-কে। প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বীকে এ দিন ‘দলের কৃষ্ণ’ বলেছেন তাঁরই দাদা তথা বিহারের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজপ্রতাপ।
প্রচার-পর্বে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা গেলেও ভোটের পালা মিটতেই সংযত তেজস্বী। আরজেডি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর স্পষ্ট বার্তা-- ভোটের ফল যা-ই হোক না কেন, করোনা আবহের কারণে কোনও মিছিল-উৎসব করা যাবে না। জেডি (ইউ) এবং বিজেপি শিবির এ দিন ছিল তুলনায় অনেক নিষ্প্রভ। যদিও জেডি (ইউ) মুখপাত্র রাজীব রঞ্জনের দাবি, ১৫ বছরের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ফের ক্ষমতায় ফিরবেন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-ভোটবাক্সে কোভিড ‘সংক্রমণ’! নীতীশেরও কি একই পরিণতি?
ইতিহাস বলছে, মঙ্গলবার ভোটে মহাজোট জিতলে ৩১ বছরের তেজস্বী হবেন কোনও পূর্ণাঙ্গ অঙ্গরাজ্যের কনিষ্ঠতম মুখ্যমন্ত্রী। ভাঙবেন ১৯৮৫ সালে অসম গণ পরিষদের নেতা প্রফুল্ল মহন্তের ৩৩ বছরে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড। ১৯৬৮ সালে একই বয়সে সতীশ প্রসাদ সিংহও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সরকার টিকেছিল মাত্র কয়েক দিন।
অবশ্য ১৯৬৭ সালে পুডুচেরির যুব কংগ্রেস নেতা এম ও হাসান ফারুক ২৯ বছর বয়সে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু পুডুচেরি আদতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।
আরও পড়ুন: বিহারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বুথ ফেরত সমীক্ষায়, সামান্য এগিয়ে তেজস্বী