বিহার বিধানসভা ভোটের প্রচারে সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট।—নিজস্ব চিত্র।
তেজস্বী যাদব বা কানহাইয়া কুমার থাকলে তো কথাই নেই। বিধানসভা কেন্দ্র ধরে ধরে মহাজোটের সাধারণ নির্বাচনী সভাতেও বিপুল সাড়া দেখতে পাচ্ছে বামেরা। হিন্দুত্ব বা সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ ছাড়িয়ে বেকারত্ব, লকডাউনে খেটে খাওয়া মানুষের বিপর্যয়ের মতো ‘প্রকৃত সমস্যা’র দিকে নজর অনেকটাই ফেরানো গিয়েছে বলেও তাদের ধারণা। এমন সব আভাস দেখে বিহারের চলতি বিধানসভা ভোটে মহাজোটের পক্ষে ইতিবাচক ফল আশা করছে সিপিএম। এবং তাদের মতে, বিহারে বিজেপি তথা এনডিএ ধাক্কা খেলে তার প্রভাব এসে পড়বে বাংলা-সহ অন্য রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনেও।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির অনলাইন বৈঠকের প্রথম দিনে বিহারের পরিস্থিতি নিয়ে এই বিশ্লেষণই উঠে এসেছে। ওই রাজ্যে আরজেডি ও কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএম, সিপিআই এবং সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন আসন ভাগ করে জেডিইউ-বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বৃহস্পতিবারই ছিলেন পটনায়। বিহারের প্রচার থেকে শুক্রবার দিল্লি গিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিয়েছেন তিনি। ইয়েচুরি, বৃন্দা কারাট, দীপঙ্কর ভট্টাচার্যদের সভায় ভাল ভিড় বামেদের পক্ষেও ইতিবাচক ইঙ্গিত বলে সিপিএমের ধারণা। ইয়েচুরির ব্যাখ্যা, বিহারে মহাজোট সফল হলে বাংলার মতো রাজ্যেও গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্য মজবুত হবে। তবে বাংলায় সেই ঐক্যের মধ্যে তাঁরা যে শাসক তৃণমূলকে ধরছেন না, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন ইয়েচুরি।
দলীয় সূত্রের খবর, কেরলে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে জোড়া গ্রেফতারের ঘটনাও আলোচিত হয়েছে এ দিনের বৈঠকে। সোনা পাচার-কাণ্ডের সূত্রে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের দফতরের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সচিব এম শিবশঙ্করকে কয়েক দিন আগে গ্রেফতার করেছে ইডি। তার পরে মাদক-চক্রকে টাকা জোগানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনের কনিষ্ঠ পুত্র বিনীশ কোডিয়ারি। দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে অর্থ তছরুপ নিরোধক আইনের (পিএমএলএ) ধারায়। কেরলের রাজ্য নেতৃত্ব যে রিপোর্ট কেন্দ্রীয় কমিটিতে দিয়েছেন, সেখানে বলা হয়েছে: কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে খোলাখুলি তদন্ত করতে দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল রাজ্যের বাম সরকার। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, সামনের ভোট মাথায় রেখে দিল্লি সেই তদন্তকে ‘ব্যবহার’ করছে। তবে আইএএস শিবশঙ্কর বা ব্যবসায়ী বিনীশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জেরে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বা রাজ্য সম্পাদক বালকৃষ্ণনের ইস্তফার প্রশ্ন উঠছে না বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
বৈঠকের শেষ দিনে আজ, শনিবার কেন্দ্র-বিরোধী কিছু আন্দোলন কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়ার কথা।