আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। ছবি: পিটিআই।
বিহার থেকে আসাদুদ্দিন ওয়েইসি বাংলায় বিধানসভা ভোটে নামার হুঁশিয়ারি দেওয়ায় তিনি কার ভোট কাটবেন, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। তার আগেই বিহারের শেষ দফা ভোটের আগে এমআইএম প্রধান যে ভাবে ঝড় তুলেছেন, তাতে আরজেডি-কংগ্রেস শিবির শঙ্কিত।
বিহারের তৃতীয় দফার ভোটের আসনগুলিতেই মুসলিম ও উর্দুভাষী জনসংখ্যার হার সব থেকে বেশি। কিসানগঞ্জ, পূর্ণিয়ার মতো বিহারের মুসলিম অধ্যুষিত সীমাঞ্চল এলাকায় ওয়াইসির জোরদার প্রচার দেখে আরজেডি, কংগ্রেস নেতারা বলছেন, তিনি আসলে বিজেপির হয়ে বিরোধীদের ভোট কাটতে নেমেছেন।
আজ বিহারের ভোট প্রচারের শেষ দিনে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা ওয়েইসিকে ‘বিজেপির তোতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, যখনই নরেন্দ্র মোদী নিজের হার টের পান, ওয়েইসির পার্টিকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে মাঠে নামিয়ে দেন। ওয়েইসি বিহারের প্রচারে সিএএ-এনআরসি নিয়ে মুসলিমদের ক্ষোভ উস্কে দিচ্ছেন। সুরজেওয়ালার দাবি, ওয়েইসির বক্তৃতার খসড়া বিজেপির দফতরেই তৈরি হয়। যাতে ভোটের মেরুকরণ করা যায়। ওয়েইসি নিজের রাজ্য তেলঙ্গানার ১১৯টি বিধানসভার মধ্যে ৯টি আসনে ভোটে লড়েন। কিন্তু বিহারে ২৪টি আসনে ভোটে লড়ছেন। নিজের রাজ্যে ওয়াইসি পুরনো হায়দরাবাদের বাইরে ভোটে লড়েন না। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডে গিয়ে ভোট লড়েন। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবও এ দিন ওয়াইসির দিকে ইশারা করে ভোটের প্রচারে বলেছেন, মানুষ জানেন, কে কোন দিকে রয়েছে। মহাজোটের নেতাদের অভিযোগ, এক দিকে যোগী আদিত্যনাথ সিএএ-এনআরসি দেখিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের দেশছাড়া করার কথা বলছেন। অন্য দিকে ওয়েইসি মুসলিমদের সিএএ-র বিরুদ্ধে উস্কে দিচ্ছেন।
আরজেডি-কংগ্রেসের চিন্তার কারণ হল, ২০১৯-এ ওয়েইসির পার্টি কিসানগঞ্জে বিধানসভা উপনির্বাচনে ভোটে জিতেছিল। বাংলা সীমান্ত লাগোয়া গ্রামীণ এলাকায় সংগঠন গড়ে তুলতে এমআইএম নিয়মিত কাজ করেছে। বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে এমআইএম-এর প্রভাব যথেষ্ট। সীমাঞ্চলে ১৯টি আসন, কোশী এলাকার ১৮টি আসনে মুসলিমরা ভোটের ভাগ্য নির্ধারণ করে। ওয়েইসি তারই ফায়দা কুড়োতে চাইছেন। কংগ্রেসের বিধায়ক আবদুল জালিল মস্তান রাহুল গাঁধীর জনসভার মঞ্চ থেকেই ওয়েইসির ‘দাঁত ভেঙে দেওয়া’-র হুমকি দিয়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, ওয়েইসি যে সর্বত্র কপ্টারে প্রচার করছেন, টাকা আসছে কোথা থেকে?
কংগ্রেসের এই নিশানার মুখে ওয়েইসি পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, হরিয়ানার রাজ্যসভা ভোটে কংগ্রেস কেন হারল? মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের ২৬ জন বিধায়ক কেন বিজেপির শিবিরে? তাঁর অভিযোগ, গত লোকসভায় যেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে, সেখানেই বিজেপির জয়ের হার সবথেকে বেশি।