নীতীশ কুমার। ফাইল চিত্র।
সপ্তম বারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন নীতীশ কুমার। রবিবার পটনায় নীতীশের বাড়িতে এনডিএ বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানেই সর্বসম্মতিক্রমে নীতীশের হাতে বিহারের ভার তুলে দেওয়া হয়। এর পরই রাজভবনে সরকার গঠনের দাবি জানাতে যান নীতীশ।
ভোটে জিতলে নীতীশ কুমারই মুখ্যমন্ত্রী হবেন, আগেই জানিয়েছিল বিজেপি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নীতীশের হাতে ফের রাজ্যভার তুলে দিয়ে সেই প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করল তারা। এ দিনের বৈঠকে নীতীশের বাড়িতে হাজির ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। সূত্রের খবর, সোমবার হবে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। মোট সাত বার মুখ্যমন্ত্রী হলেও, ধারাবাহিক ভাবে চার বার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন নীতীশ।
এ বার বিহারে তিন দফায় নির্বাচন হয়েছে। ফল বেরিয়েছে ১০ নভেম্বর। এনডিএ জোট পেয়েছে ১২৫ আসন। মহাগঠবন্ধন পেয়েছে ১১০টি। তবে পরিযায়ী শ্রমিক, লকডাউন এবং স্থানীয় স্তরে দুর্নীতি-সহ বেশ কয়েকটি ইস্যু এ বার প্রভাব ফেলেছে জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)-এর ভোটের ঝুলিতে। যার জেরে ফল খুব একটা ভাল করতে পারেনি তারা। ৪৩টি আসন পেয়েছে। সেখানে বিজেপি পেয়েছে ৭৪টি আসন।
আরও পড়ুন: উত্তমকুমার হয়ে ওঠেননি, কিন্তু বেলাশেষে তিনি সৌমিত্র
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক আসন হারানোর ফলে এবং বিজেপির আসন সংখ্যা বাড়ার ফলে নীতীশ কুমার যথেষ্ট চাপে ছিলেন। সূত্রের খবর, বিজেপির একাংশও নীতীশের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার পক্ষে রাজি ছিলেন না। ভোটের ফল বেরনোর পরই একটা জল্পনা তৈরি হয়েছিল আদৌ কি নীতীশের হাতে শাসনভার তুলে দেওয়া হবে। অবশেষে সেই জল্পনার অবসান ঘটল। সর্বসম্মতিক্রমে এনডিএ জোটের নেতা হিসেবে মান্যতা দিলেন বিধায়করা।
২০০০ সালের ৩ মার্চ প্রথম বারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারায় এক সপ্তাহের মধ্যেই সরকার পড়ে যায়। এর পর ২০০৫-এর ২৪ নভেম্বর বিজেপি-র সমর্থনে দ্বিতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন ২০১০ সালে। ২০১৪-তে লোকসভা নির্বাচনে তাঁর দল জেডিইউ খুব খারাপ ফল করে। তার পরই মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ থেকে ইস্তফা দেন নীতীশ। তাঁর জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী হন জিতন রাম মাঁঝি। ইস্তফা দেওয়ার ঠিক ১৫ মাসের মাথায় ২০১৫-র ফেব্রুয়ারিতে চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ। এর পর আরজেডি-র সঙ্গে জোট বেঁধে বিপুল ভোটে জয়ী হয় নীতীশের দল। ওই বছরের ২০ নভেম্বর পঞ্চম বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদের শপথ নেন তিনি। উপমুখ্যমন্ত্রী হন লালুপুত্র তেজস্বী যাদব। ২০১৭-য় আরজেডি-র সঙ্গে জোট ভেঙে যায়। এর পরই বিজেপি-র হাত ফের সরকার গড়েন নীতীশ। এবং ষষ্ঠবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন। এ বারের নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সপ্তম বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন তিনি।