রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
আগ বাড়িয়ে রাহুল গাঁধীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, মিথ্যা প্রচার না-করে, এসে দেখে যান উপত্যকার শান্তিপূর্ণ ছবিটা। দরকারে রাহুলের জন্য বিমান পাঠাতেও রাজি বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাহুল সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করতেই অস্বস্তিতে পড়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। নিজে কিছু বলেননি সারা দিনে। দিল্লির সঙ্গে শলা-পরামর্শের পরে রাতে রাহুলের সফর নিয়ে ভিন্ন সুরে বার্তা দিয়েছে রাজভবন! জানিয়েছে, পুলিশ ও প্রশাসন দেখবে বিষয়টি। যা দেখে এক কংগ্রেস নেতার কটাক্ষ, ‘‘ছিল ব্যক্তিগত আমন্ত্রণ। তা গ্রহণ করতেই, প্রশাসনের দোহাই তা বাতিল করতে উদ্যোগী হলেন নিমন্ত্রণকর্তা!’’
সংবাদমাধ্যমে কাশ্মীরিদের উপর পুলিশি অত্যাচারের বিভিন্ন অভিযোগ সামনে আসায় সরব রাহুল। বলেছেন, ‘‘৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল হওয়ার কারণে অশান্তি শুরু হয়েছে উপত্যকায়। মানুষ মারা যাচ্ছেন। সরকার দাবি করলেও, পরিস্থিতি আদৌও স্বাভাবিক নয়।’’ রাহুলের ওই মন্তব্যের জবাব দিতে গত কাল আসরে নামেন রাজ্যপাল। বলেন, ‘‘আমি রাহুল গাঁধীকে এখানে আসার অনুরোধ করছি। প্রয়োজনে বিমান পাঠাব। তিনি এসে দেখে, তার পর মন্তব্য করুন।’’
রাজ্যপালের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে আজ সকালেই টুইট করেন রাহুল। লেখেন, ‘‘আমি ও বিরোধী দলের নেতাদের একটি দল আপনার আমন্ত্রণে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের পরিস্থিতি ঘুরে দেখতে রাজি। আমাদের বিমান লাগবে না। শুধু আমরা যাতে স্বাধীন ভাবে ঘুরতে পারি এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে পারি সেটা নিশ্চিত করুন।’’ এর পরেই চুপ হয়ে যান রাজ্যপাল। রাত প্রায় আটটায় নীরবতা ভাঙে রাজভবন। রাজ্যপালের বদলে রাজভবনের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘‘রাজনীতি করতেই নিজের সঙ্গে প্রতিনিধিদের দল আনতে চাইছেন রাহুল গাঁধী। এতে উপত্যকা অশান্ত হবে, অসুবিধে হবে সাধারণ মানুষের। রাহুল যে-হেতু একাধিক শর্ত দিয়েছেন, তাই তার আসার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছেন রাজ্যপাল।’’
কংগ্রেসের নেতারা মনে করছেন, রাজ্যপাল ব্যক্তিগত ভাবে আমন্ত্রণ জানালেও রাহুলের ‘মাস্টার স্ট্রোকে’ তিনি এখন প্রশাসনকে ঢাল করছেন। যাতে রাহুলের সফর ঠেকানো বা বাতিল করা যায়। কারণ কেন্দ্রের বর্তমান নীতিই হল এই মুহূর্তে কোনও বিরোধী দল যেন সক্রিয় হতে না-পারে উপত্যকায়। যে কারণে মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লাকে গ্রেফতার এবং ফারুক আবদুল্লাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। গত সপ্তাহে প্রথমে কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ, পরে দুই বাম নেতা, সীতারাম ইয়েচুরি এবং ডি রাজাকে শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসতে হয়েছে।