ছবি: পিটিআই।
ক’দিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট জম্মু-কাশ্মীরের সব জরুরি পরিষেবায় ইন্টারনেট চালু করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও জম্মু-কাশ্মীরে পুরোপুরি চালু হল না ইন্টারনেট। বন্ধ রাখা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার কার্যকলাপও। প্রশাসনের যুক্তি, বিচ্ছিন্নতাবাদী, দেশ বিরোধীরা বড়সড় হাঙ্গামা বাধানোর চক্রান্ত করতে পারে। সে কারণেই সতর্কতা।
গত কাল রাতে জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনের তরফে স্বরাষ্ট্র বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি শালীন করবা একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেখানে আংশিক ভাবে ইন্টারনেট চালু করার কথা জানিয়েছেন। সরকারি নির্দেশে বলা হয়, জম্মু ডিভিশনে জম্মু, সাম্বা, কাঠুয়া, উধমপুর, রিয়াসির মতো ৫টি জেলায় পোস্টপেড কানেকশনে টু জি মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। মুসলিম অধ্যুষিত চেনাব ভ্যালি এলাকায় অবশ্য এই পরিষেবা চালু করা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর ডিভিশনে হাসপাতাল, ব্যাঙ্ক, হোটেল, পর্যটনের মতো জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালু হচ্ছে। তবে কাশ্মীর ডিভিশনে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা ফেরানো হচ্ছে না। সেখানে অতিরিক্ত ৪০০টি ইন্টারনেট কিয়স্কের ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, পড়ুয়ারা এগুলি কাজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। পাশাপাশি, হাসপাতাল, ব্যাঙ্ক, সরকারি দফতর, হোটেল, পর্যটনের মতো বিভিন্ন জরুরি পরিষেবায় জুড়ে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ব্রডব্যান্ড পরিষেবার ব্যবস্থা করতে পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে যে সব প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট চালু হচ্ছে, সেখানে অপব্যবহার আটকানোর দায়িত্ব তাদের নিতে হবে। ব্যবহারকারীদের উপর নজরদারির ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে তাদের।
আরও পড়ুন: বিশেষ মর্যাদা লোপ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: সেনাপ্রধান
বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট না ফেরানোর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, জঙ্গি, বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং দেশ বিরোধী শক্তি বড়সড় হাঙ্গামা বাধাতে পারে। প্রশাসনের যুক্তি, বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর থেকে এখনও পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে ঠিক ভাবে রক্ষা করা গিয়েছে। তবে আশঙ্কা থেকে এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেমন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার মতো বিষয়। অবশ্য পরিস্থিতি অনুযায়ী এতেও ক্রমশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় জনজীবনে সঙ্কট বেড়েছে। বিভিন্ন পরীক্ষায় বসতে ইচ্ছুক পড়ুয়াদের ফর্ম পূরণের জন্য বাধ্য হয়ে অন্য রাজ্যে যেতে হচ্ছে। সঙ্কটে পড়েছেন পর্যটকেরাও। আজ শ্রীনগরের মিডিয়া সেন্টারে ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করতে পৌঁছন মালয়েশিয়ার পর্যটকদের একটি দল। বেশ কিছু দিন হল কাশ্মীরে এসেছেন তাঁরা। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ ছিল না। আজ মিডিয়া সেন্টারে পৌঁছে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য প্রশাসনের অনুমতি চান তাঁরা। শেষ পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তাঁরা।