ছবি: এপি।
হিউস্টনে অন্য ভাষার সঙ্গে বাংলাতেও প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘(দেশে) সব খুব ভাল।’’ দেশে কাশ্মীর নিয়ে তাঁর সেনাপতি অমিত শাহ বলেন, ‘‘কাশ্মীরে কোনও বিধিনিষেধই নেই। বিধিনিষেধ তো কারও কারও মনে। সেখানে তো এ বারে পঞ্চায়েতের নীচের স্তরে ভোটও হবে।’’ রাতের মধ্যে ব্লক স্তরের ভোটও ঘোষণা করে দিয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের নির্বাচন কমিশন।
সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নিয়ে সদ্য ছ’দিন জম্মু-কাশ্মীরে কাটিয়ে এসেছেন সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ। ঘুরেছেন জম্মু, শ্রীনগর, বারামুলা, অনন্তনাগের মতো এলাকা। আজ সেখানকার অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়ে বললেন, ‘‘সব নাকি খুব ভাল? কোনও বিধিনিষেধই নাকি নেই? সরকার যে ছবি দেখাচ্ছে, তা ধোঁকা ছাড়া আর কিছু নয়। নেতারা বন্দি, আর ভোট করছে বিজেপি। অবিলম্বে এ সব বন্ধ হোক।’’
যে হেতু সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নিয়ে জম্মু-কাশ্মীর গিয়েছেন আজাদ, তাই শীর্ষ আদালতে রিপোর্ট দেবেন সেখানকার হাল হকিকতের। আজ বললেন, ‘‘বিধিনিষেধ না থাকলে নিজের রাজ্যে যাওয়ার জন্য আদালতের অনুমতি নিতে হল কেন? অধিকাংশ জায়গাতেই যেতে দেয়নি প্রশাসন। যাঁরা দেখা করতে এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথোপকথনও ভিডিয়ো বন্দি হয়েছে। ভয় দেখানো হয়েছে, মুখ খুললে উঠিয়ে নেওয়া হবে। মানুষ খেতে পাচ্ছেন না। তবু তাঁরা প্রশাসনকে সমর্থন করছেন না। ইন্টারনেট-মোবাইল ফোন বন্ধ, স্কুল-কলেজ বন্ধ, ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। শুধু উপত্যকার নয়, জম্মুরও।’’
গত কালই অমিত শাহ জানান, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত গঠন হয়ে গেলেই ভারত সরকার ৭ হাজার কোটি টাকা পাঠাবে। তা খরচ হবে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে। ৫-৭ বছরে উন্নয়নে সেরা হবে জম্মু-কাশ্মীর। কিন্তু আজাদের দাবি, কাশ্মীরের অর্ধেক বাসিন্দাই শ্রমিক, কারিগর। ব্যবসা, পরিবহণ বন্ধ। তাই তাঁদের দিনমজুরিও নেই। শ্রীনগরের অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত জম্মুরও ব্যবসা। সকালে যে এক-দেড় ঘণ্টা বাজার খোলা হয়, সেখানকার ছবি দেখিয়েই সরকার দাবি করছে ‘সব স্বাভাবিক, সব ভাল।’
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আজাদের আবেদন, ছ’মাসের জন্য খাবার, ওষুধ বিনামূল্যে বিলি করা হোক। চালু হোক স্কুল-কলেজ, ইন্টারনেট-মোবাইল। আবদুল্লা-মুফতিদের সঙ্গে কংগ্রেসের নেতাদেরও বন্দি রেখে আসন পুনর্বিন্যাস করে ফেলে যে ভোট করাচ্ছে বিজেপি, তা বাতিল হোক। সব দলের নেতার সঙ্গে আলোচনা করে নতুন ভাবে আসন পুনর্বিন্যাস করা হোক। ভোট হোক পরের বছর।
অন্য দিকে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ এবং নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতায় পেশ করা সব আর্জির শুনানি এক দিন পিছিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। আজ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানান, অযোধ্যা শুনানি
প্রতিদিন চলার ফলে সাংবিধানিক বেঞ্চে কাশ্মীর সংক্রান্ত মামলা শোনার সময় পিছিয়ে দিতে হয়েছে। আগামিকাল থেকে ওই আর্জিগুলি শোনা হবে। পাশাপাশি ফারুক আবদুল্লাকে আটক করার বিরুদ্ধে এমডিএমকে প্রধান ভাইকোর আর্জি এ দিন খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তাঁকে ‘উপযুক্ত মঞ্চ’-এ আবেদন জানাতে বলা হয়েছে।