বিবেক দেবরায়। —ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান বিবেক দেবরায় প্রয়াত হলেন। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এই অর্থনীতিবিদের বয়স হয়েছিল ৬৯। অসুস্থতার কারণে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (এমস)-এ চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেখানেই শুক্রবার সকালে তিনি প্রয়াত হন।
দেবরায়ের জন্ম শিলংয়ের এক বাঙালি পরিবারে। স্বাধীনতার সময় তাঁর পিতামহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সিলেট থেকে শিলংয়ে এসেছিলেন। কলকাতায় পড়াশোনার পালা শেষ করে দিল্লি ‘স্কুল অফ ইকনমিক্স’-এ পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। এর পরে গন্তব্য ছিল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজ। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে যোজনা কমিশন বাতিল করে নীতি আয়োগ গড়লে তার পরিচালন পর্ষদের অন্যতম সদস্য করা হয়েছিল দেবরায়কে। ইউপিএ জমানায় ‘রাজীব গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ কনটেম্পোরারি স্টাডিজ়’-এর অধ্যক্ষ ছিলেন দেবরায়।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে নীতি আয়োগ পুনর্গঠনের সময় অবশ্য বাদ পড়েছিলেন দেবরায়। তবে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়েছিল তাঁকে। পরে পরিষদের চেয়ায়ম্যান হন তিনি। ২০২৩ সালে স্বাধীনতা দিবসের আগে দেবরায় এক নিবন্ধে সংবিধানের আমূল বদলের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তার পরে কংগ্রেস, বাম-সহ বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিল, বাবাসাহেব অম্বেডকরের তৈরি সংবিধান বদলাতে চাইছে মোদী সরকার।
বাঙালি অর্থনীতিবিদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, ‘‘বিবেক দেবরায়জি অর্থনীতি, ইতিহাস, সংস্কৃতি, রাজনীতি, আধ্যাত্মিকতা এবং আরও অনেক বিষয়ে সুপণ্ডিত ছিলেন। তাঁর কাজের মাধ্যমে, তিনি ভারতের বৌদ্ধিক মননে স্থায়ী ছাপ রেখে গেলেন। জনসম্পর্কিত নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অবদানের বাইরেও নানা ভূমিকা ছিল তাঁর। তিনি আমাদের প্রাচীন গ্রন্থগুলিকে আধুনিক ভাষার মাধ্যমে যুবসমাজের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। আমি দেবরায়কে বহু বছর ধরে চিনতাম। আমি তাঁর অন্তর্দৃষ্টি এবং শিক্ষামূলক বক্তৃতার কথা মনে রাখব।’’ সমাজমাধ্যমে শোকবার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।