অমিত শাহ। —ফাইল ছবি।
অমিত শাহের নির্দেশে কানাডার মাটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপর হামলা এবং ভীতিপ্রদর্শনের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ তুলেছে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকার। এ বার সেই অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাল আমেরিকা। বৃহস্পতিবার জো বাইডেন সরকারের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘‘এমন অভিযোগের বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ নিয়ে আমরা কানাডার সঙ্গে কথা বলব।’’
কানাডার মন্ত্রী ডেভিড মরিসন মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট পার্লামেন্ট কমিটিকে জানিয়েছিলেন, নরেন্দ্র মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের নির্দেশে কানাডায় খলিস্তানপন্থীদের সম্পর্কে গোয়েন্দাদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, তাঁদের উপর হামলা এবং ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটছে। মঙ্গলবার সকালে আমেরিকার সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টে মরিসনের মন্তব্য উদ্ধৃত করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে ওই মন্তব্য করেছিলেন তিনি। মরিসনের ওই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে নতুন করে নয়াদিল্লি-অটোয়া সংঘাতের আবহ তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তারই মধ্যে ওয়াশিংটনের এই বিবৃতি মোদী সরকারের উপর চাপ বাড়াবে বলে কূটনীতিকদের একাংশ মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ অক্টোবর কানাডা সরকারের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে যাঁদের স্বার্থ জড়িত, সেই তালিকায় কানাডায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার সঞ্জয়কুমার বর্মা রয়েছেন। এর পরেই সঞ্জয়-সহ কয়েক জন কূটনীতিককে দেশে ফেরত আনা হয়। পাশাপাশি, বিদেশ মন্ত্রক ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে বহিষ্কার করে কয়েক জন কানাডার কূটনীতিককে। সেই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, কানাডার আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে কট্টরপন্থী খলিস্তানি গোষ্ঠীগুলির সমর্থন পাওয়ার জন্য ট্রুডো সরকার নতুন করে নিজ্জর বিতর্ক প্রকাশ্যে নিয়ে আসছে। কিন্তু এ বার ভারত-কানাডা বিতর্কে আমেরিকার ‘অনুপ্রবেশ’ বিষয়টিকে ‘অন্য মাত্রা’ দিতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
খলিস্তানি নেতা নিজ্জরকে ২০২০ সালে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে ঘোষণা করেছিল ভারত। তিন বছর পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সারের একটি গুরুদ্বারের সামনে তাঁকে হত্যা করা হয়। এর পরেই নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। গত সপ্তাহে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘কানাডার সার্বভৌমত্বকে ভারত লঙ্ঘন করেছে। এটি তাদের বড় ভুল।’’ কিন্তু এত দিন পর্যন্ত সরাসরি ভারতের কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে নিশানা করেননি তাঁরা। ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ সেই সীমারেখা লঙ্ঘনের পরেই আমেরিকাকে পাশে পেলেন ট্রুডো।