শম্ভু সীমানায় কৃষকদের দিকে ছোড়া হচ্ছে কাঁদানে গ্যাস। —ফাইল চিত্র ।
কৃষক আন্দোলন নিয়ে চাপের মুখে পড়া নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনায় নামল সঙ্ঘ পরিবারের কৃষক সংগঠন ভারতীয় কিসান সঙ্ঘ। তাদের বক্তব্য, কৃষকেরা যখন শান্তিপূর্ণ ভাবে দিল্লি পৌঁছে সমস্যার কথা তুলে ধরতে চাইছেন, সরকার সেই ভাবনাকে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। সরকারের এমন দৃষ্টিভঙ্গিকে কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না এবং এ থেকেই আন্দোলনে হিংসা ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সঙ্ঘের কৃষক সংগঠনের নেতারা।
গত কালও পঞ্জাব ও হরিয়ানার সীমানায় বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের সম্মিলিত মঞ্চ, সংযুক্ত কিসান মোর্চার ছাতার নীচে থাকা আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে হরিয়ানার বিজেপি সরকারের পুলিশের। জড়ো হওয়া হাজার হাজার কৃষককে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে পুলিশ। কৃষক নেতাদের আটক করা হয়েছে। কৃষক নেতারা অভিযোগ করেছেন, ‘দিল্লি চলো’ অভিযানে যোগ দিতে আসা কয়েক জন কৃষককে মারধরের পর হরিয়ানার নিরাপত্তাবাহিনী তুলে নিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সঙ্ঘ পরিবারের কৃষক সংগঠনের তরফে আসা সমালোচনা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
রাজস্থানের অজমেরে সঙ্ঘের কৃষক সংগঠন, ভারতীয় কিসান সঙ্ঘের পদাধিকারীদের বৈঠকের পরে আজ মোদী সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলির একাংশের সহিংস বিক্ষোভেরও নিন্দা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কৃষকদের নাম করে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। কেউ কেউ আবার এই আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন। মোদী সরকারের উদ্দেশে সঙ্ঘের কিসান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহিনী মোহন মিশ্র বলেছেন, ‘‘সরকার যে মনোভাব দেখাচ্ছে, তা নিন্দার যোগ্য। এর ফলে হিংসা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’
পঞ্জাব ও হরিয়ানার সীমানায় বসে থাকা কৃষকেরা আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁদের ‘দিল্লি চলো যাত্রা’ স্থগিত রেখে আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন। ২৯ তারিখ একটি সভায় দিল্লি অভিযানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। পঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যে শম্ভু ও খানাউরি সীমানায় জড়ো হওয়া কৃষকেরা আজ মোমবাতি মিছিল করেছেন। তারপর শম্ভু সীমানায় দাঁড়িয়ে পঞ্জাব কিসান মজদুর সংঘর্ষ কমিটির নেতা সারণ সিংহ পান্ধের বলেন, ‘‘আজ পর্যন্ত পাঁচ জন কৃষকের মৃত্যুর পরে আমাদের দায়বদ্ধতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। যে কাজের জন্য তাঁরা জীবন দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ করার জন্য আন্দোলন চলবে।’’ আন্দালনরত কৃষকদের প্রতি আজ তাঁর সমর্থন জানিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। আহত কৃষকদের পঞ্জাবে ফেরানোর জন্য সে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিয়ানা সরকারকে চিঠিও লিখেছেন।