National News

ভারতমাতার জয়ধ্বনির অপপ্রয়োগ: মনমোহন

মনমোহনের মতে, গণতন্ত্র হিসেবে ভারতের আজকের ভাবমূর্তি এবং বিশ্বের অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে দেশকে গড়ে তোলার প্রধান কারিগর ছিলেন নেহরুই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪০
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

জাতীয়তাবাদ এবং ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগানের অপব্যবহার করা হচ্ছে বলে মনে করেন মনমোহন সিংহ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মতে, ভারত সম্পর্কে একটি উগ্র ও সম্পূর্ণ আবেগতাড়িত ভাবনা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যেই এটি করা হচ্ছে। কিন্তু ভারতের এ হেন ধারণায় দেশের লক্ষ লক্ষ বাসিন্দা ও নাগরিকের কোনও ঠাঁই নেই।

Advertisement

দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর রচনা, বক্তৃতা, সাক্ষাৎকার ও তাঁকে নিয়ে সমসাময়িকদের বক্তব্য নিয়ে একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে আজ এই মন্তব্য করেন মনমোহন। যাকে সমালোচনা হিসেবেই দেখছে শাসক শিবির। বিজেপির আইটি সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অমিত মালব্য পত্রপাঠ বলেছেন, ‘‘এই মনমোহন সিংহই এক সময়ে বলেছিলেন, দেশের সম্পদের উপরে প্রথম অধিকার আছে মুসলিমদের। এ বার সেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তোষণের রাজনীতির জন্য এমন পর্যায়ে গেলেন! বড় হতাশার।’’

পুরুষোত্তম আগওয়াল ও রাধা কৃষ্ণের লেখা বইটির শিরোনামের বঙ্গানুবাদ করলে হয়, ‘ভারত মাতা কে?’ সেই সূত্রেই মনমোহন বলেন, বর্তমান সময়ে বইটি জরুরি।। তাঁর কথায়, ‘‘নেহরু বলেছিলেন, ‘কে ভারত মাতা? কার জয় তুমি চাও? নদী-পাহাড়-বন-মাঠ সকলেরই প্রিয়, কিন্তু সবার উপরে মানুষ।’ অতীত ও বর্তমানের মেলবন্ধন ঘটিয়ে, সাম্প্রদায়িক অনৈক্য এড়িয়ে তৈরি হয়েছিল নেহরুর ভারতের ভাবনা। যার ভিত্তি গাঁধীর নীতি। আমাদের দেশের বহুত্ববাদকে যা তুলে ধরেছিল। রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও প্রকৃত গণতন্ত্রবাদী নেতা ছিলেন নেহরু। তাঁর উত্তরাধিকার আজ যতটা জরুরি মনে হচ্ছে, ইতিহাসে কখনও তা মনে হয়নি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: সমগোত্রে বিয়ে করায় মেয়েকে খুন, খালে দেহ

মনমোহনের মতে, গণতন্ত্র হিসেবে ভারতের আজকের ভাবমূর্তি এবং বিশ্বের অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে দেশকে গড়ে তোলার প্রধান কারিগর ছিলেন নেহরুই। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয় ঘটিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষ হয় ইতিহাস না-পড়ে, না-হয় নিজেদের সংস্কারের বশবর্তী হয়ে নেহরুকে ভুল ভাবে দেখাতে চাইছে। নেহরু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ফাঁদে পড়ে জনতার থেকে দূরে সরে যান নেতারা। আবার নেহরুকে উদ্ধৃত করে মনমোহন বলেন, ‘‘মানবদেহে চর্বির মতো দম্ভ যখন বেড়ে চলে, তখন বোঝাই যায় না। কোনও বড় আঘাত এসে তাকে চুরমার করে। ভারত এমন অনেক আঘাত দেখেছে।’’

নেহরুর প্রসঙ্গ টেনে বারবার প্রকৃত রাষ্ট্রনেতার ভূমিকার কথা বলা, দম্ভ নিয়ে সতর্কীকরণ, ভিন্নতার মেলবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা— অনেকেই বলছেন, বিজেপির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী পদে নিজের বর্তমান উত্তরসূরিকেও আজ দায়িত্ব মনে করিয়ে দিয়েছেন মনমোহন সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement