হলদোয়ানিতে প্রচারে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। পিটিআই
তিনি নিজেই বলেছিলেন, শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশেই মন দিতে চান। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে গোয়ার পরে এ বার প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাবেও প্রচারে নামাল কংগ্রেস।
আজ উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিনে প্রিয়ঙ্কা রাজ্যের তিনটি নির্বাচনী কেন্দ্র, খটিমা, হলদোয়ানি, শ্রীনগরে প্রচার করেছেন। এর মধ্যে খটিমা রাজ্যের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামির বিধানসভা কেন্দ্র। কংগ্রেস মনে করছে, ধামি নিজের ঘরের মাঠে চাপে রয়েছেন। তাই প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে গিয়ে আরও চাপ তৈরির চেষ্টা হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের পরে আগামিকাল প্রিয়ঙ্কা পঞ্জাবের মালয়া অঞ্চলের ধুরি, দেরা বস্সি ও কোটকাপুরাতে তিনটি জনসভা করবেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিমকে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে বিজেপি মালয়া অঞ্চলে তাঁর অনুগামীদের প্রভাবিত করতে চাইছে। একই সঙ্গে আম আদমি পার্টির দিক থেকেও কংগ্রেস মালয়া অঞ্চলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সেই কারণেই প্রিয়ঙ্কাকে প্রচারে নামানো।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, এর দু’টি দিক রয়েছে। এক, এআইসিসি-তে প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত হলেও অন্য রাজ্যের নেতারাও তাঁকে প্রচারে চাইছেন। দুই, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ভাল ফলের আশা কম। সেই তুলনায় উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাবে কংগ্রেসের ভাল ফলের আশা অনেক বেশি। প্রিয়ঙ্কা সেখানে প্রচারে গেলে সেই ভাল ফলের কৃতিত্ব পাবেন।
প্রিয়ঙ্কা আজ খটিমায় উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে বেকারত্ব, কৃষক আন্দোলন, লকডাউনের সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা নিয়ে তাঁকে নিশানা করেছেন। আজ সকালেই রাহুল গান্ধী টুইট করে ২০১৮ থেকে ২০২০ পর্যন্ত বেকারত্ব ও ঋণের বোঝার দায়ে তিন বছরে ২৫ হাজারের বেশি আত্মহত্যার ঘটনার দিকে আঙুল তুলেছিলেন। রাহুলের প্রশ্ন ছিল, ‘‘বেকারত্বের ফলে আত্মহত্যা বেড়েছে। আর বেকারত্ব কার জন্য বেড়েছে?” প্রিয়ঙ্কা সেই বেকারত্ব নিয়েই আক্রমণ করে বলেন, ‘‘উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী এখানে চুড়ি, টিপ বিলি করছেন। চাকরি বিলি করেননি কেন? জিজ্ঞাসা করুন, শহর থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের গ্রামে ফেরার সময় আপনি কোথায় ছিলেন? কৃষকরা যখন আন্দোলন করছিলেন, তখন কোথায় ছিলেন?’’
খটিমার সভায় প্রধানমন্ত্রীকেও নিশানা করে প্রিয়ঙ্কা। বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর বন্ধু দু’জন শিল্পপতির দিকে তাকিয়েই কেন্দ্রীয় সরকার দেশের নীতি ঠিক করছে। অথচ বাজেটে গরিব মানুষ, কৃষক, মধ্যবিত্ত, ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কোনও কথা নেই।’’ প্রিয়ঙ্কার কথায়, ‘‘এক জন নেতার ধর্ম হল, মানুষের কল্যাণে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। তবে কোনও কোনও দল রয়েছে যারা সব সময় নিজেদের লাভের কথাই ভাবে। বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ধর্ম। তবে মোদী সরকার করোনার সময়ে মানুষকে ঈশ্বরের দয়ার উপরে ছেড়ে দিয়েছিল। বিপদের সময়ে পাশে দাঁড়ায় না যারা, তারা অধার্মিক।’’