— প্রতীকী ছবি।
নিজের চার বছরের ছেলেকে খুন করার অভিযোগে অভিযুক্ত মা। ঘটনাটি ঘটেছে গোয়ায়। পুলিশের অনুমান, ছেলেকে গোয়ায় খুন করে ৩৯ বছরের মা সূচনা শেঠ ট্যাক্সিতে বেঙ্গালুরু ফিরছিলেন। তার মধ্যেই জানাজানি হয়ে যায় ঘটনার কথা। পুলিশ মহিলার ট্যাক্সি চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনিই কর্নাটকের চিত্রদুর্গ জেলার একটি থানায় নিয়ে যান ট্যাক্সি। মহিলা টের পাননি। পুলিশের তল্লাশিতে তাঁর ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় ছেলের দেহ। গ্রেফতার হন মা।
সোমবার সকালে উত্তর গোয়ার ক্যান্ডোলিমের একটি হোটেলের অন্তর্গত সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট (ব্যবসায়িক কারণে যে আবাসন ভাড়া দেওয়া হয়) থেকে চেকআউট করেন ৩৯ বছরের সূচনা। তিনি বেঙ্গালুরুর একটি স্টার্টআপের কর্ণধার তথা সিইও। হোটেল থেকেই ঠিক করে দেওয়া স্থানীয় একটি ট্যাক্সি চড়ে তিনি বেঙ্গালুরু রওনা দেন। হোটেলের কর্মীরা পরে যখন তাঁর ফ্ল্যাটটি পরিষ্কার করতে যান, তাঁরা দেখতে পান ফ্ল্যাটের মেঝেতে ইতস্তত রক্তের দাগ। তাঁদের সন্দেহ হওয়ায় হোটেল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। চলে আসে পুলিশ।
হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে গোটা ঘটনা জানান। তাঁরা আরও জানান যে, মহিলা সকালেই বেঙ্গালুরু ফেরার কথা জানান হোটেলকে। হোটেল থেকে তাঁকে বিমানের টিকিট করে দেওয়ার কথা জানানো হয়, কিন্তু হোটেলের ম্যানেজারের দাবি, সূচনা ট্যাক্সি করেই বেঙ্গালুরু ফিরতে যেন বদ্ধপরিকর ছিলেন। অগত্যা তাঁকে একটি ট্যাক্সি ভাড়া করে দেওয়া হয়। ব্যাগপত্র নিয়ে তাতে চড়ে বসেন সূচনা। গাড়ি ছোটে বেঙ্গালুরুর দিকে।
অন্য দিকে, ফ্ল্যাটে রক্তের দাগ দেখতে পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সূচনা যখন হোটেল ছাড়ছিলেন তখন সঙ্গে নেই তাঁর চার বছরেরর ছেলে। পুলিশ সোজা সূচনাকে ফোন করে। জানতে চায়, ছেলে কোথায়? সূচনা অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবে জানান, ফতোরদায় তাঁর এক বন্ধুর বাড়িতে ছেলেকে রেখে তিনি জরুরি কাজে বেঙ্গালুরু ফিরছেন। বন্ধুর নাম, ঠিকানাও পুলিশকে দেন সূচনা। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুরোটাই ভুয়ো। ওখানে ওই নামে কেউ থাকেনই না।
এর পর পুলিশ যোগাযোগ করে সূচনার ট্যাক্সির চালকের সঙ্গে। তাঁকে গোটা ঘটনা পুলিশ জানায়। স্থানীয় কোঙ্কনি ভাষায় চালক পুলিশকে জানান, তিনি কর্নাটকের চিত্রদূর্গ জেলায় প্রবেশ করেছেন। নিকটবর্তী থানায় যেন গোয়া পুলিশ কথা বলে রাখে, তিনি সূচনাকে নিয়ে সেখানেই পৌঁছচ্ছেন। সেই মতো সূচনাকে টের পেতে না দিয়ে চালক সোজা আইমঙ্গলা থানায় গাড়ি নিয়ে চলে যান। সেখানে প্রস্তুত ছিল পুলিশ। সূচনাকে জিজ্ঞাসাবাদেও যখন কিছুই বেরোয় না, তখন তাঁর ব্যাগ তল্লাশি করা হয়। ব্যাগ খুলতেই দেখা যায়, লুকোনো রয়েছে তাঁর চার বছরের ছেলের রক্তাক্ত দেহ। পুলিশ সূচনাকে গ্রেফতার করেছে।