‘কাজ করতে দেওয়া হয়নি সাংবাদিকদের, দুর্ব্যবহারও করা হয়’, আয়কর ‘সমীক্ষা’ নিয়ে অভিযোগ বিবিসির। ফাইল চিত্র।
সংস্থার দিল্লি এবং মুম্বইয়ের অফিসে আয়কর ‘সমীক্ষা’ নিয়ে আরও এক বার মুখ খুলল বিবিসি। বিবিসির হিন্দি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আয়কর সমীক্ষা চলার সময়ে তাদের সাংবাদিকদের কাজ করতে দেওয়া হয়নি। ওই সাংবাদিকদের সঙ্গে নাকি দুর্ব্যবহারও করেন আয়কর বিভাগের কর্তারা। এর আগে আয়কর বিভাগের তরফে জানানো হয়েছিল, ৩ দিন ধরে সংস্থার দুই অফিসে ‘সমীক্ষা’ চালানো হলেও বিবিসির দৈনন্দিন কাজ চালানোর ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হয়নি।
বিবিসির হিন্দি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বহু সময় ধরে সাংবাদিকদের কাজ করতে দেওয়া হয়নি। আয়কর বিভাগের কর্মীরা এবং পুলিশ তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।” ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, “সাংবাদিকদের কম্পিউটার এবং ফোন পরীক্ষা করে দেখা হয়। তাঁরা কী ভাবে কাজ করেন, তা জিজ্ঞাসা করা হয়।” অভিযোগের সুরেই বিবিসির তরফে জানানো হয়েছে যে, সম্পাদকরা দ্রুত কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানালেও দীর্ঘক্ষণ কোনও সাংবাদিককে কিছু লিখতে দেওয়া হয়নি। এমনকি এই ‘সমীক্ষা’ নিয়ে কিছু লিখতেও নিষেধ করে দেওয়া হয়।
৩ দিনের আয়কর সমীক্ষার পরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বিবিসির নাম না করেই বলা হয়েছিল, “একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দিল্লি এবং মুম্বই অফিসের নথি খতিয়ে দেখে আয় এবং ব্যয়ের মধ্যে অসঙ্গতি লক্ষ করা গিয়েছে।” এর আগে আয়কর সমীক্ষার পরে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছিল, আগের মতোই ভয় না পেয়ে, নিরপেক্ষ ভাবে খবর করে যাবে তারা।
২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় সে রাজ্যে সংখ্যালঘুদের কেমন অবস্থা ছিল, তা নিয়ে দুই পর্বে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। কিন্তু ‘ইন্ডিয়া: দি মোদী কোয়েশ্চেন’ শীর্ষক তথ্যচিত্রটি বিশেষ তথ্যপ্রযুক্তি আইন প্রয়োগ করে ইউটিউব-সহ যাবতীয় সমাজমাধ্যম থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরই কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। ওই মামলায় কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট তলব করে দেশের শীর্ষ আদালত। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্ত্রীরা কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও বিজেপির একাধিক নেতা বিবিসির তীব্র সমালোচনা করে জানান, দেশকে খাটো করার জন্যই মিথ্যা এবং বিকৃত তথ্য পরিবেশন করছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি। সরকারের তরফেও জানানো হয়, বিবিসির ওই তথ্যচিত্র দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার আদর্শকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারের বিরুদ্ধে ‘প্রকৃত তথ্য’ তুলে ধরার জন্যই হেনস্থা করা হচ্ছে বিবিসিকে।