ছবি— পিটিআই।
জঙ্গি নিশানায় আসার পর আপাতত জম্মু-কাশ্মীরের শিবিরেই (ট্রানজিট ক্যাম্প) বন্দি থাকতে হচ্ছে প্রায় চার হাজার কাশ্মীরি পণ্ডিতকে। বেরোনোর অনুমতি নেই। মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পের অধীন প্রায় চার হাজার কাশ্মীরি পণ্ডিত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিরাপদ জায়গায় না পৌঁছনো হলে, উপত্যকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবেন, এই হুমকি দিয়েছিলেন। মঙ্গলবারই জম্মুর এক স্কুল শিক্ষিকা রজনীবালাকে কুলগামে স্কুলের ঠিক বাইরে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। তার পরই এই হুঁশিয়ারি দেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। তারই ফলশ্রুতি, কড়া নিরাপত্তার বেড়াজালে মুড়ে ফেলা হয়েছে ট্রানজিট ক্যাম্প। প্রসঙ্গত, গত মাসেই রাহুল ভট নামে এক কাশ্মীরি পণ্ডিতকেও একই ভাবে অফিসের মধ্যে গুলি করে মারা হয়।
বুধবার সকাল থেকেই উপত্যকায় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের শিবিরগুলো সিল করে দেওয়া হয়। শ্রীনগরের শহরতলি এলাকায় ইন্দ্রনগর ক্যাম্প সকাল থেকেই কাঁটাতারে ঘিরে ফেলা হয়েছে। ক্যাম্পের মধ্যে বসবাসকারী কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই। ভেসু পণ্ডিত কলোনিতেও একই চিত্র। কিন্তু এই কড়াকড়িকে ভাল ভাবে নিচ্ছেন না ক্যাম্পে বসবাসকারী পণ্ডিতরা। তাঁরা ভেসু কলোনিতে বিক্ষোভও দেখান এবং পুনর্বাসনের দাবি জানান।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘আমাদের নিরাপদ জায়গায় পুনর্বাসন দেওয়া হোক। প্রতিনিধিরা লেফট্যানেন্ট গভর্নর মনোজ সিন্হার সঙ্গে দেখা করে আমাদের বাঁচানোর আবেদন রেখেছিলাম। আমরা চাই, উপত্যকার পরিস্থিতি যত দিন না স্বাভাবিক হয়, তত দিন আমাদের নিরাপদ জায়গায় থাকতে দেওয়া হোক।’’
তবে এই প্রথম নয়, অক্টোবরে পাঁচ দিনের ব্যবধানে সাত জন সাধারণ মানুষকে খুন করা হয়। মৃতদের মধ্যে ছিলেন দু’জন প্রবাসী হিন্দু, এক জন কাশ্মীরি পণ্ডিত এবং এক জন শিখ সম্পদায়ভুক্ত। তার পর থেকেই উপত্যকা ছেড়ে আবার কাশ্মীরি পণ্ডিতদের গণপলায়ন শুরু হয়ে যায়। তাঁদের আটকাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বুধবার সকাল থেকে নতুন করে উপত্যকা ছাড়ার হিড়িক আটকাতেই কি বজ্রআঁটুনির ব্যবস্থা? বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার তাঁদের মৃত্যু নিশ্চিত করতেই এখানে ফেলে রেখেছে।