অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর নবীকরণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন। সংগঠনটি জানিয়েছে, আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে দ্রুত এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।
আজ সংগঠনের ২৬-তম কেন্দ্রীয় অধিবেশনে অসমের বঙ্গভাষীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা উঠে আসে। বক্তাদের অনেকে বলেন ‘এক দিকে ভাষিক আগ্রাসনের মাধ্যমে বাংলাকে ধ্বংসের চেষ্টা চলছে। অন্য দিকে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নবীকরণের নামে বঙ্গভাষীদের বিতাড়িত করার ষড়যন্ত্র চলছে।’ তাঁরা জানান, শুধু সভা-সমিতি, ধর্না-আন্দোলন করে এতে বিশেষ লাভ হবে না। যেতে হবে আদালতে।
‘আসাম পাবলিক ওয়ার্কস’ নামে একটি সংগঠনের আর্জিতে সুপ্রিম কোর্ট অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নবীকরণের নির্দেশ দিয়েছে। কোন সালকে ভিত্তিবর্ষ করা হবে, কী কী নথিপত্র বিবেচনা করা হবে তা অসম সরকারের ক্যাবিনেট কমিটি চূড়ান্ত করেছে। তা করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই।
বরাক বঙ্গ সম্মেলনের অধিবেশনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এ বিষয়ে রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ তৈরির বদলে আদালতের দ্বারস্থ হওয়াই উচিত হবে। ১৯৬১ সালে ১১ জন তরুণ-তরুণীর প্রাণের বিনিময়ে বাংলাকে বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে এখনও উপত্যকায় অসমীয়া ভাষা ব্যবহার করা হয়। অধিবেশনে এই বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রশ্ন ওঠে, ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক প্রশ্নপত্রে শুধু অসমীয়া ও ইংরেজিতে লেখা থাকলে, বরাকে বাংলা-ইংরেজির সঙ্গে অসমীয়া কেন যোগ করা হয়? বরাক বঙ্গ সম্মেলনের মঞ্চ থেকে এ বিষয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদকে চিঠি পাঠানোর কথা জানানো হয়। পাশাপাশি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বাংলা ভাষায় যে কোনও বিভাগের স্নাতক পরীক্ষা গ্রহণের আর্জি জানানোর সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়।
কেন্দ্রীয় অধিবেশনে এ দিন বরাক বঙ্গের কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠিত হয়। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হন যথাক্রমে নীতীশ ভট্টাচার্য এবং গৌতমপ্রসাদ দত্ত। তিনটি জেলা থেকে এক জন করে উপ-সভাপতি ও সহ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে।