ভি বৈদ্যনাথন।
তাঁর হাত ধরেই অঙ্ক শেখা। আর সেই শিক্ষাই তাঁকে মস্ত বড় এক মানুষ বানিয়েছে। আজ তিনি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সিইও। এই চাকরিটাই হত না, যদি না অঙ্কের শিক্ষক ইন্টারভিউয়ের জন্য সে দিন ৫০০ টাকা না দিতেন। সাফল্যের শিখরে পৌঁছেও সেই অঙ্কের শিক্ষক এবং তাঁর অবদান ভোলেননি ছাত্র।
যে শিক্ষকের জন্য তিনি আজ ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তা, সেই শিক্ষকের দুরাবস্থার কথা শোনামাত্র স্থির থাকতে পারেনননি ছাত্র। শিক্ষককে খুঁজে বার করে তাঁর হাতে তুলে দিলেন ব্যাঙ্কের লাখ লাখ টাকার শেয়ার! এক জন সফল ছাত্র হিসাবে এ ভাবেই গুরুদক্ষিণা দিলেন ভি বৈদ্যনাথন।
বৈদ্যনাথন যে স্কুলে পড়তেন, সেখানে অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন গুরদয়াল স্বরূপ সৈনি। নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা বৈদ্যনাথনের স্বপ্ন অনেক বড় ছিল। সেই স্বপ্ন নিয়েই রাঁচীর মেসরাতে একটি টেকনোলজি কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন বৈদ্যনাথন। কিন্তু সেখানে ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার টাকা ছিল না তাঁর কাছে। বিষয়টি শিক্ষক গুরদয়ালের কাছে পৌঁছতেই বৈদ্যনাথনকে ডেকে পাঠান তিনি। তার পর তাঁর হাতে ৫০০ টাকা গুঁজে দিয়ে ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে বলেন।
ইন্টারভিউয়ে পাশ করেছিলেন বৈদ্যনাথন। তার পর সেখান থেকে পড়াশোনা শেষে একটি বড় ব্যাঙ্কে চাকরিও পান। তার পর অনেকটা সময় গড়িয়ে গিয়েছে। হঠাৎ এক দিন বৈদ্যনাথন তাঁর পরিচিতের কাছ থেকে খবর পান তাঁর অঙ্কের শিক্ষকের দুর্দিন চলছে। সেই খবর পেয়ে স্থির থাকতে পারেননি বৈদ্যনাথন। শিক্ষকের খোঁজ করা শুরু করেন। স্কুলে গিয়ে জানতে পারেন অনেক আগেই স্কুল ছেড়েছেন তাঁর শিক্ষক।
বৈদ্যনাথন শিক্ষকের খোঁজ নেওয়া বন্ধ করেননি। তার পর এক দিন তাঁরই এক প্রাক্তন সহকর্মীর কাছ থেকে খবর পান অঙ্কের শিক্ষক আগরায় রয়েছেন। শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে নিজের ব্যাঙ্কের এক লক্ষ শেয়ার তুলে দেন। যার বর্তমান মূল্য ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি। যে সময় বৈদ্যনাথন গুরুদক্ষিণা হিসাবে শিক্ষকের হাতে শেয়ার তুলে দিয়েছিলেন, সেই সময় এক একটি শেয়ারের দাম ছিল ৩০ টাকা।