মণিপুরের রাস্তায় টহল দিয়ে চলেছে নিরাপত্তাবাহিনী। পরিস্থিতি এখনও অশান্ত। ছবি: পিটিআই।
মে মাসের গোড়ায় মণিপুরে সংঘর্ষের যে আগুন জ্বলে উঠেছিল, তা এখনও স্তিমিত হয়নি। উত্তর-পূর্বের রাজ্যের পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। সোমবার মধ্যরাতে গোলাগুলির কারণে প্রাণ হারালেন বিএসএফ-এর এক জওয়ান। সেনা আধিকারিক সূত্রে খবর, নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের মধ্যে সংঘর্ষ চলেছে সোমবার মধ্যরাতে। এই সংঘর্ষের ফলে বিএসএফ-এর এক জন জওয়ান মারা গিয়েছেন। গুলির আঘাতে আহত হয়েছেন দুই সেনাও।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের তিন দিনের মণিপুর সফরের পরেও রাস্তায় টহল দিচ্ছেন সেনারা। বাড়িঘর এখনও জনমানবশূন্য। পরিস্থিতি লক্ষ করে ৩ মে মণিপুর সরকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল।
তবে সরকারের তরফে এ কথাও জানানো হয়েছিল যে, সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ইন্টারনেট পরিষেবা আবার চালু করা হবে। কিন্তু মণিপুরের অশান্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় আরও কিছু দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার জানিয়েছে শনিবার অর্থাৎ ১০ জুন পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। শনিবার পর্যন্ত এলাকার কেউ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন না বলে সোমবার সন্ধ্যায় সরকারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে, শনিবার দুপুর ৩টে নাগাদ ইন্টারনেট পরিষেবা শুরু হতে পারে বলে আশ্বাস দিয়েছে মণিপুর সরকার।গত ৩ মে থেকে মেইতেই এবং কুকি জনজাতির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে মণিপুরে। তার জেরে ইতিমধ্যেই ৭৫ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। অমিত শাহের সফরের আগেই জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণ হারান ৪০ জন জঙ্গি। নতুন করে সেই হিংসা ছড়িয়েছে ককচিং জেলার সুগনুতে। সেখানে কুকি জনগোষ্ঠীর জঙ্গিরা স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়কের বাড়ি-সহ প্রায় ২০০টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।
ওই এলাকায় নতুন করে ঘরছাড়া হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। শুক্রবার রাত থেকে সুগনুতে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তাংজেং, নাপেট, পোম্বিখক-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে আসা সশস্ত্র কুকি জঙ্গিরা হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। সুগনুর কংগ্রেস বিধায়ক কাংগুজাম রণজিতের বাড়িও আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা।