বদরুদ্দিন আজমল।—ফাইল চিত্র।
মিয়াঁ বলে আর কোনও সঙ্কোচ বা লুকোচুরি নয়। ইউডিএফ প্রধান বদরুদ্দিন আজমলের দাবি, মিয়াঁরাও অসমের ভূমিপুত্র। নগাঁও থেকে অসম প্রথম মিয়াঁ সাংসদ পেতে চলেছে বলেও দাবি তাঁর।
সীমানা পুনর্বিন্যাসের পরে গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল রাজনীতির কেন্দ্রে থাকা নগাঁও লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করে দিল ইউডিএফ। ধিঙের বিধায়ক আমিনুল ইসলাম নগাঁও থেকে লড়বেন। আমিনুলকে নিয়ে আজ মঞ্চ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সে কথা ঘোষণা করলেন আজমল।
বিজেপি গত কয়েক বছর ধরেই মিয়াঁ বা পূর্ববঙ্গীয় মূলের মুসলমানদের বিরুদ্ধে সরব। মিয়াঁ সংগ্রহশালা তৈরি করায় জেলে যেতে হয়েছে প্রতিষ্ঠাতা-সহ ৫ জনকে। ‘মিয়াঁ কবিতা’ লেখা নিয়েও কবিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে রাজ্যে। ভূমিপুত্র মুসলিমদের সঙ্গে মিয়াঁ মুসলিমদের ফারাক বারবার প্রমাণ করতে সচেষ্ট মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। তিনি ভূমিপুত্র মুসলিমদের উন্নয়ন করতে তাঁদের নিয়ে আর্থ-সামাজিক সুমারিরও নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু ইউডিএফ মুসলিমদের মধ্যে বিভাজনের বিরোধী ও তারা দাবি করে, অসমে বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় মিয়াঁদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
আজমল আজ তাঁর বাংলা বক্তৃতায় বিশেষ ভাবে জোর দেন ‘মিয়াঁ’ শব্দের উপরেই। কারণ, আমিনুলকে মিয়াঁ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বলে সমালোচনা করে বিজেপি। আজমল বলেন, ‘‘হ্যাঁ আমিনুল মিয়াঁই। মিয়াঁরাও এখানকার ভূমিপুত্র।’’ গানে-স্লোগানে জমজমাট জনসভায় আজমল বলেন, ‘‘ভারতের সংসদে প্রথম বার মিয়াঁ সাংসদ নির্বাচিত হবেন এখান থেকেই। খোদ হিমন্তবিশ্ব শর্মা এলেও আমিনুলকে হারাতে পারবেন না।’’
বর্তমানে নগাঁও আসন কংগ্রেসের হাতে। কিন্তু কংগ্রেস সাংসদ প্রদ্যোৎ বরদলৈ আদৌ নগাঁও থেকে লড়বেন কি না বা কলিয়াবর কেন্দ্র ভেঙে যাওয়ায় সেখানকার সাংসদ গৌরব গগৈ নগাঁও থেকে লড়বেন না কাজিরাঙা কেন্দ্র থেকে— তা নিয়ে কংগ্রেসে বিস্তর জল্পনা চলছে। এ দিকে সীমানা পুনর্বিন্যাসের জেরে নগাঁও জেলায় সংখ্যালঘু ভোট বেড়েছে।
গত বার কংগ্রেসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে নগাঁওতে প্রার্থী দেয়নি ইউডিএফ। ১৪টির মধ্যে মাত্র ৩টি আসনে লড়ে ১টিতে জিতেছিল। কিন্তু এ বার তারা কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী ঐক্য মঞ্চে নেই। তাই সকলের আগেই নগাঁওতে প্রার্থী ঘোষণা করে দিলেন আজমল। তাঁর দাবি, কংগ্রেসের প্রদ্যোৎ বা গৌরব কারও নগাঁওতে লড়াই চালানোর ক্ষমতা নেই।