Badaun

সন্ধ্যায় একা না বেরোলে এমন হত না, বদায়ূঁতে কমিশন সদস্যের কথায় বিতর্ক

চলন্ত গাড়িতে মহিলাকে গণধর্ষণের পর যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বদায়ূঁ শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ২১:৩৯
Share:

চন্দ্রমুখী দেবী

সন্ধ্যাবেলা একা ওই মহিলা না বেরোলে, এমন ঘটনা ঘটত না। বদায়ূঁতে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর বৃহস্পতিবার জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য চন্দ্রমুখী দেবী এমন মন্তব্য করলেন। যাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তুঙ্গে।

Advertisement

গত রবিবার নির্ভয়া-কাণ্ডের স্মৃতি উস্কে ফের ভয়ঙ্কর গণধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছিল উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে। তার পর চন্দ্রমুখী দেবী বৃহস্পতিবারবদায়ূঁ যান নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে। সেখানে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘উনি যদি ওই সময় না বেরোতেন, তা হলে এমন ঘটনা ঘটত না। উনি চাপে ছিলেন। কিন্তু একজন মহিলার সব সময় বিবেচনা করে দেখা উচিত, কখন তিনি বেরোবেন। সন্ধ্যাবেলা উনি যদি না বেরোতেন কিংবা বেরোলেও পরিবারের কোনও সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন, তা হলে হয়তো ওঁকে বাঁচানো যেত।’’

জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যের মুখে এই মন্তব্য শোনার পর তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। যা সামলাতে তড়ঘড়ি ময়দানে নামতে হয় কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাকে। তিনি টুইট করেন, ‘আমি জানি না কেন এবং কী ভাবে কমিশনের ওই সদস্য এমন মন্তব্য করলেন। একজন মেয়ের নিজের ইচ্ছামতো যেখানে খুশি, যখন খুশি যাওয়ার স্বাধীনতা রয়েছে। আমরা একটা সমাজে বাস করি। মেয়েদের নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের কাজ’। পরে আরও একটি টুইট করেন তিনি। লেখেন, ‘কমিশনের পক্ষ থেকে এই মন্তব্যের সমালোচনা করা হচ্ছে। এটা কোনও ভাবেই জাতীয় মহিলা কমিশনের মত নয়’।

Advertisement

চন্দ্রমুখীর ওই মন্তব্যের ফুটেজ ভাইরাল হয়ে যায় মুহূর্তেই। পূজা ভট্ট-সহ একাধিক সেলিব্রিটি এবং নেটাগরিকজাতীয় মহিলা কমিশন এবং রেখাকে ওই ভিডিয়ো ফুটেজ ট্যাগ করে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। পূজা যেমন টুইট করে রেখার কাছে জানতে চান, ‘আপনিও কি চন্দ্রমুখীর বক্তব্যের সঙ্গে একমত? দয়া করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন’। এর পরই রেখা ওই জবাব দেন।

নতুন বছরের শুরুতেই উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁর ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে দেশকে। বদায়ূঁর উঘৈতি থানা এলাকায়চলন্ত গাড়িতে রবিবার সন্ধ্যায় মধ্যবয়সি এক মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের পর নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ভেঙে দেওয়া হল পাঁজর ও পায়ের হাড়। রক্তপাত বন্ধ না হওয়ায় মৃত্যু হয় ওই মহিলার। দীর্ঘ গড়িমসির পর ময়নাতদন্ত এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের মামলা দায়ের করা হয় বলে অভিযোগ।

স্থানীয় মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন নির্যাতিতা। তার পর আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। মধ্যরাতে রাস্তার পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। ধর্ষণের পর দুষ্কৃতীরা তাঁকে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় বলে জানা গিয়েছে। সেই অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই মহিলাকে। কিন্তু রাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।

চন্দ্রমুখী দেবী অবশ্য পরে ওই পরিবারের সদস্যের সঙ্গে দেখা করার পর বলেন, ‘‘পুলিশের ভূমিকায় আমি সন্তুষ্ট নই। সময় মতো পদক্ষেপ করলে হয়তো ওঁকে বাঁচানো যেত। শারীরিক পরীক্ষা করায় দেরি তো হয়েইছে, দেরি হয়েছে এফআইআর করার ক্ষেত্রেও।’’

গত সেপ্টেম্বরে হাথরসের ঘটনার ৩ মাস কাটতে না কাটতেই, এই ঘটনায় নতুন করে প্রশ্নের মুখে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। প্রশ্নের মুখে সে রাজ্যের পুলিশের ভূমিকাও। হাথরস-কাণ্ডের সময়েও পুলিশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি রাতারাতি নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়ায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে। বদায়ূঁর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আরও পড়ুুন: ধর্মান্তরণের অভিযোগ মিথ্যা, হলফনামায় স্বীকার করল যোগী সরকার

ইতিমধ্যেই সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব নিজের দল থেকে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন নিজেদের মতো করে ঘটনার সত্যাসত্য উদ্ঘাটন করতে।

আরও পড়ুুন: প্রত্যন্ত এলাকায় টিকা পৌঁছতে বিমান বাহিনীকে কাজে লাগানোর ভাবনা সরকারের

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement