—ফাইল চিত্র।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় শুনানি ও রায়দান শেষ করার জন্য বিশেষ সিবিআই আদালতকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত এর আগে ৩১ অগস্টের মধ্যে এই কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল। বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব সুপ্রিম কোর্টের কাছে বাড়তি সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ৯২ বছর বয়সি বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী, ৮৬ বছর বয়সি মুরলীমনোহর জোশী, ৬১ পার করা উমা ভারতী এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত। এঁদের সাক্ষ্য নেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে ইতিমধ্যেই।
সপ্তদশ শতকে তৈরি বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর। আড়াই দশকেও সেই মামলায় অগ্রগতি হচ্ছে না দেখে সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭ সালের এপ্রিলে নির্দেশ দেয়, দৈনিক ভিত্তিতে শুনানি চালিয়ে দু’বছরের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে বিশেষ আদালতকে। এর পরে সময় বাড়িয়ে তা ২০২০-র ৩১ অগস্ট করা হয়। তার পরেও ফের সময় বাড়ানোর আর্জিটি সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্ট আজ বলেছে, “বিশেষ বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদবের রিপোর্ট পড়ে বোঝা যাচ্ছে, শুনানি একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। আমরা আরও এক মাস সময় দিচ্ছি। অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রায়দান-সহ বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।”
করোনা অতিমারির মধ্যেই আডবাণী গত ২৪ জুলাই ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সিবিআই আদালতের কাছে তাঁর সাক্ষ্য রেকর্ড করিয়েছেন। সিবিআই তাঁর উদ্দেশে ১০০টিরও বেশি প্রশ্ন রেখেছিল। সূত্রের খবর, আডবাণী প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মুরলীমনোহরের সাক্ষ্য নেওয়া হয় তার আগের দিন, ২৩ জুলাই। সূত্রের খবর, তিনিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছেন। সাক্ষ্য দেওয়ার পরে উমা গত ২৫ জুলাই জানান, আদালত সাক্ষ্য দিতে বলেছিল। তিনি দিয়েছেন। যা সত্য, সেটাই বলেছেন। রায় কী হবে, তা নিয়ে তিনি আদৌ ভাবিত নন। তাঁর কথায়, “আমাকে যদি ফাঁসিতেও ঝোলানো হয়, আমার কাছে সেটা হবে আশীর্বাদ। আমার জন্মভূমি এতে খুশিই হবে।”
আরও পড়ুন: দাউদের ঠিকানা পাকিস্তানেই, কবুল করল ইসলামাবাদ
আরও পড়ুন: মোদীকে বিঁধতে ফের রাফাল অস্ত্র রাহুলের
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় এর আগের শুনানিটি হয়েছিল অযোধ্যায় রামজন্মভূমিতে মন্দিরের ভূমিপূজা ও শিলান্যাসের দিন কয়েক আগে। গত ৫ অগস্টের সেই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবত-সহ অন্য ভিআইপিরা উপস্থিত থাকলেও যাঁর রথযাত্রায় ওঠা ঝড়ে তা সম্ভব হল, সেই আডবাণীই যোগ দিতে পারেননি। অযোধ্যায় রামমন্দির এখন সময়ের অপেক্ষা। আর এখন বাবরি মসজিদ ধ্বংসের চক্রান্তে লিপ্ত থাকার অভিযোগ নিয়ে সিবিআই আদালত কী রায় দেয়, আডবাণী-জোশী-উমারা এখন তার অপেক্ষায়।
ইতিমধ্যেই এই মামলার উল্লেখযোগ্য তিন অভিযুক্ত গিরিরাজ কিশোর, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অশোক সিঙ্ঘল এবং বিষ্ণু হরি ডালমিয়ার মৃত্যু হয়েছে।