আয়ুষকে এমবিবিএস-এর পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্য বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। তাকে সমর্থন করে নীতি আয়োগ। সেই সঙ্গে দেশ জুড়ে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ধাঁচে ‘ওয়েলনেস ক্লিনিক’ খুলে তার অধিকাংশ আয়ুষ চিকিৎসকদের (আয়ুর্বেদ, ইউনানি, সিদ্ধা, হোমিওপ্যাথি) দিয়ে চালানোর পরিকল্পনাও করে। ভোটের আগে রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে কেন্দ্র এ ব্যাপারে থমকে গেলেও এখন এই দু’টি প্রকল্প চালু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তারা।
নীতি আয়োগের অন্যতম সদস্য বিনোদ কুমার পল ফোনে বলেন, ‘‘সঙ্কীর্ণমনা কিছু লোক এতে বাধা দিচ্ছিল। ভারতের সহস্র বছরের পুরনো চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে হবু চিকিৎসকদের যদি এমবিবিএসে কিছু ধারণা দেওয়া হয়, তাতে ক্ষতি কী? অ্যালোপাথির চিকিৎসকেরা প্রেসক্রিপশনে সেটা লিখলেন না, কিন্তু বিষয়টা তো শিখলেন। এতে তাঁদের ও রোগীদের—উভয়েরই লাভই হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কোন যোগব্যায়াম কোন রোগের পক্ষে ভাল, কোন গাছগাছড়ার ছাল বা পাতার রস কোন রোগে ভাল কাজ করে— এই সব জ্ঞান পরিবারের অনেক গুরুজনেরও আছে। সেটাই চিকিৎসকেরা শিখবেন।’’
আয়ুষ মন্ত্রকের সচিব রাজেশ কোটেচা-ও ফোনে বলেন, ‘‘কোন গাছগাছড়া কী অসুখ সারায়, হবু ডাক্তারদেরও তা জানা দরকার। সমস্যা কোথায়?’’ তিনি জানিয়েছেন, আশা কর্মীদের দিয়েও এ বার গোটা দেশে বাড়ি-বাড়ি ওষধি গাছ, পাতা, মূলের গুণাগুণ জানানোর কাজ শুরু হতে চলেছে। রান্নাঘর সংলগ্ন বাগানে এগুলি লাগানোর কথা বলবেন তাঁরা। কোটেচার কথায়, ‘‘নতুন সরকার শপথ নেওয়ার পরেই প্রথম ১০০ দিনে দেশ জুড়ে ২৫০০ ‘ওয়েলনেস সেন্টার’ তৈরি হবে। তার ১০ শতাংশে আয়ুষ চিকিৎসকেরা বসবেন। পশ্চিমবঙ্গেও আমরা এটা করব। গোটা দেশে এই রকম দেড় লক্ষ কেন্দ্র চালু হবে।’’
দেশে চিকিৎসকদের বৃহত্তম সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএমএ)-ও এর আগে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল। সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার চিকিৎসক-সাংসদ শান্তনু সেনের কথায়, ‘‘ওদের শক্তি বেড়েছে। নতুন সরকার গড়ার পরেই ওরা হয়তো এই বিষয়ে বিল এনে এগুলি চালু করবে। তবে আমদের প্রতিবাদ চলবে। আমার দেড় বছর মেয়াদ আছে।’’