সরযূ নদী ধারে দীপাবলির আলো। শুক্রবার অযোধ্যায়। পিটিআই
সরযূ নদীর তীরে গিনেস বুকের রেকর্ড ভেঙে জ্বলেছে এক সঙ্গে ৬ লক্ষের বেশি মাটির প্রদীপ। সঙ্গে চোখ ধাঁধানো আলোর খেলা (লেজার শো)। কোথাও রাম-সীতা-লক্ষ্মণ-হনুমানের মূর্তি তো কোথাও রামায়ণের পাতা থেকে উঠে আসা বিভিন্ন ছবির প্রদর্শনী। রামমন্দির গড়তে সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং প্রধানমন্ত্রীর হাতে তার শিলান্যাসের পরে প্রথম দীপাবলিতে তাকলাগানো উৎসবের মেজাজ অযোধ্যায়।
উত্তরপ্রদেশে মসনদ দখলের পর থেকেই দীপাবলিতে অযোধ্যায় দীপোৎসবের আয়োজন শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। করোনা-কালেও সরকারি উদ্যোগে তাকে যে উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তার মধ্যে অযোধ্যাকে পর্যটনের আকর্ষণীয় গন্তব্য করে তোলার চেষ্টার পাশাপাশি যোগীর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খারও ছায়া দেখছেন অনেকে। রামলালার অস্থায়ী ঠিকানা, রামজন্মভূমি, প্রতিটি মঠ-মন্দির-রাস্তাকে মুড়ে ফেলা হয়েছে আলোর মালায়। ৬ লক্ষেরও বেশি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে বন্দোবস্ত করা হয়েছে নতুন বিশ্বরেকর্ড তৈরির।
রামমন্দিরের দৌলতে বিশ্বের রামভক্তদের টেনে এনে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হতে চাইছে অযোধ্যা। অতিমারির মধ্যেও এমন আয়োজন নাকি সেই কারণেই। যে লক্ষ্যে এখানে তৈরি হওয়ার কথা বিমানবন্দর। চওড়া হচ্ছে রাস্তা। হোটেল, রেস্তরাঁর আগ্রহ দেখে দাম বাড়তে শুরু করেছে জমির। রামমন্দিরের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিজে এলাকার চেহারা বদলে যাওয়ার কথা বলে যাওয়ার পরে তৎপরতা বেড়েছে দুই সরকারের। এর মধ্যে যোগীর ‘মোদী-মডেলও’ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন শিল্পবান্ধব প্রশাসন তৈরির জন্য প্রশংসিত হতেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ টেনে আনতে পারাকে নিজের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতেন তিনি। একই ভাবে, গুজরাতকে আরও বেশি পর্যটনমুখী করতে চালু করেছিলেন নবরাত্রি উৎসব। সম্প্রতি যোগী যে ভাবে বার বার শিল্পে বড় লগ্নি টানার চেষ্টার কথা বলছেন, জনপ্রিয় করতে চাইছেন দীপোৎসবকে, তাতে তাঁর মধ্যে মোদীর উত্তরসূরি হয়ে উঠতে চেষ্টার ইঙ্গিত পাচ্ছেন অনেকে।