এটিএমে টাকার আকাল, নোটবন্দির স্মৃতি উস্কে আতঙ্ক ছড়ালো আমজনতার মনে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিদেশে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি অসুস্থ। তার মধ্যেই অবশ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তাঁর বার্তা: ‘এই ঘাটতি সাময়িক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩৭
Share:

নোট বাতিলের ভূত ফের হাজির নরেন্দ্র মোদী সরকারের সামনে।

Advertisement

প্রায় এক ডজন রাজ্যের এটিএম-এ নগদ মিলছে না। ঝুলছে ‘নো ক্যাশ’ বোর্ড। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, পঞ্জাব, অসম, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, ঝাড়খণ্ড, এমনকী দিল্লির কিছু অংশে নগদের অভাব দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও বহু এটিএম-এ টাকা নেই বলে জানান বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, চাহিদামতো নোট সরবরাহ করতে পারছে না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিদেশে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি অসুস্থ। তার মধ্যেই অবশ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তাঁর বার্তা: ‘এই ঘাটতি সাময়িক। বাজারে যথেষ্ট পরিমাণ নগদ রয়েছে। কোনও কোনও রাজ্যে মাত্রাতিরিক্ত টাকা তোলা হয়েছে। তাই এমন অবস্থা।’ আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষ গর্গ জানিয়েছেন, গত তিন মাস ধরেই কিছু রাজ্যে নগদের চাহিদা অস্বাভাবিক বেড়েছে। প্রতি মাসে গড়ে ২০ হাজার কোটি টাকার নগদ জোগান দিতে হয়। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে সেই তুলনায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার কোটি টাকা করে জোগান দিতে হয়েছে। এপ্রিল মাসে নগদের চাহিদা আরও বেড়েছে। প্রথম ১৩ দিনেই জোগাতে হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। তবে দু-তিন দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে অর্থ মন্ত্রকের আশা।

Advertisement

কিন্তু খানিকটা হলেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে আমজনতার মনে। কারণ, দেড় বছর আগের নোটবন্দি। আর সেই স্মৃতিকে হাতিয়ার করেই মোদী সরকারকে বিঁধতে আসরে নেমেছে বিরোধীরা। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর মন্তব্য, ‘ফের নোটবন্দির আতঙ্ক ঘনাচ্ছে।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেছেন, ‘সেই নোটবন্দির দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে। দেশে কি তবে আর্থিক জরুরি অবস্থা চলছে?’ আর সরকারি আশ্বাসবাণী উড়িয়ে এক স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তার মন্তব্য, ‘‘মাসখানেকের আগে সমস্যা মিটবে বলে মনে হচ্ছে না।’’

অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে নগদ টাকা তুলতে শুরু করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। সেই কারণেই অর্থ মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তা থেকে স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার, সকলেই বলেছেন, নগদের অভাব নেই। কাজেই আতঙ্কে বেশি করে নগদ জমিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। গর্গ জানান, প্রতিদিন ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের ৫০০ টাকার নোট ছাপানো হয়। তা বাড়িয়ে ২৫০০ কোটি টাকা মূল্যের করা হবে। ১০০ টাকা বা তার কম অঙ্কের নোটেরও অভাব নেই।

কিন্তু বাস্তব হল, এটিএম-এ টাকা মিলছে না বহু রাজ্যেই। ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন, অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালান্স না থাকলে ব্যাঙ্ক জরিমানা করে। তা হলে এটিএম-এ টাকা না থাকলে ব্যাঙ্ক জরিমানা দেবে না কেন?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement