নিজস্ব চিত্র
সরবরাহে দেরি নিয়ে ভারতের টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউটকে আইনি নোটিস পাঠাল অ্যাস্ট্রাজেনেকা। কোভিশিল্ড সরবরাহের বিষয়ে সেরামের উপর নির্ভর করছে পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ। ভারতেও টিকার চাহিদা রয়েছে। দেশকে প্রাধান্য দিয়ে তবেই বিদেশে টিকা পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে সেরাম। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
জাতীয় সংবাদমাধ্যমে সেরামের প্রধান আদর পুনাওয়ালা বলেছেন, ‘‘ভারত সরকার এই আইনি নোটিসের বিষয়ে বিস্তারিত জানে। এটি গোপন একটি নোটিস, এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না। তবে সরকারের সাহায্যে আইনি জটিলতা কাটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভারতে সরবরাহের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণেই অন্য দেশে সরবরাহে দেরি হচ্ছে। আশা করি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’’
আদর জানিয়েছেন, প্রতি মাসে ৬ থেকে ৬ কোটি ৫০ লক্ষ টিকা তৈরি করতে পারে সেরাম। সেই হিসাবে এখনও সংস্থা ১০ কোটি টিকা ভারতে সরবরাহ করেছে আর ৬ কোটি টিকা বিদেশে গিয়েছে। তাঁর মতে, ভারতকে প্রাধান্য দেওয়ার ফলে টিকায় টান পড়ার বিষয়টি অন্য দেশগুলিকে বোঝানো সমস্যার। এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যদি উৎপাদনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হয়, তাহলে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ দরকার। কিন্তু ভারতে সরকারকে ভর্তুকিতে টিকা বিক্রি করতে হচ্ছে, দাম পড়ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। অন্য দিকে বিদেশে এই টিকা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। আদরের বক্তব্য, উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এই বিপুল বিনিয়োগ টিকা পিছু সামান্য লাভ করে জোগাড় করা সম্ভব নয়। সেই কারণে হয় ঋণ করতে হবে বা বড় কোনও বিনিয়োগকারী সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই একমাত্র উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
মজুত থাকা করোনা টিকা দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলে দেশের বেশ কিছু রাজ্যও অভিযোগ করেছিল সম্প্রতি। টিকাকরণে ঘাটতি তৈরি হতে পারে বলে বুধবারই জানিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে। বুধবার রাতে সে রাজ্যের সাতারা জেলায় টিকার ডোজ শেষ হয়ে যাওয়ায় গত ৩ দিন ধরে বন্ধ টিকাকরণ। সুপ্রিয়া সুলে টুইট করে বলেছিলেন, পুনেতেও ১০০-র উপর টিকাকরণ কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে টিকার অভাবে।
যদিও মহারাষ্ট্রের টিকার ঘাটতি নিয়ে রাজেশের এই অভিযোগ মানেননি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সব রাজ্যকে পর্যাপ্ত টিকার ডোজ পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে পাল্টা আক্রমণও করেছেন তিনি। হর্ষবর্ধনের অভিযোগ, ‘‘কিছু রাজ্য করোনার ছড়িয়ে পড়া রুখতে ব্যর্থ হচ্ছে। সে দিক থেকে নজর ঘোরাতে, সাধারণের মধ্যে ভয় ছড়াতে টিকা কমের কথা বলছে।’’
টিকা নিয়ে রাজনৈতিক তরজার মধ্যে সেরামকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার পাঠানো আইনি নোটিস তাৎপর্যপূর্ণ।