—প্রতীকী ছবি।
উত্তর-পূর্বের প্রথম তথা দেশের তৃতীয় রূপান্তরিত বিচারক স্বাতী বিধান বরুয়াকে আটক করল পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ উঠেছে। লোক আদালতের বিচারক হয়েছিলেন আইনজীবী স্বাতী। সেই সঙ্গে তিনি অসমে রূপান্তরিত ও রূপান্তরকামীদের সংগঠন তৈরি করে মানবাধিকার সংক্রান্ত কাজও করছিলেন। পুলিশ তাঁকে আটক করার পরে তাঁর দফতর লন্ডভন্ড করে উত্তেজিত জনতা।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের ২৯ মে। স্বাতী তাঁর দফতরের কর্মী, পান্ডুর বাসিন্দা মনসুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ফলে মনসুরকে গ্রেফতার হয়ে জেলে যেতে হয়। কিছু দিন আগে তিনি জামিন পান। মনসুরের পরিবারের দাবি, স্বাতী মনসুরকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। মনসুর রাজি না হওয়ায় তাঁর জামিনের বিরুদ্ধে ফের আদালতের দ্বারস্থ হন স্বাতী। পরিবারের অভিযোগ, ওই মামলা লড়তে দরিদ্র মনসুরের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন এক আইনজীবী। কিন্তু সেই টাকা দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর ছিল না। সঙ্গে ছিল পরিবারের লজ্জার চাপ। আজ সকালে মনসুরের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। স্বাতীর বিরুদ্ধে তাঁর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হন মনসুরের মা।
মনসুরের পরিবার জানায়, ২০২১ সালে স্বাতীর কাছে কাজ নেন মনসুর। পরে কাজ ছেড়ে দিয়ে আবার কাজ নেন। পরিবারের অভিযোগ, স্বাতী মনসুরের বাড়ি উপহারে ভরিয়ে দিচ্ছিলেন। ভয় দেখিয়ে, উপহার দিয়ে মনসুরকে যৌনতায় বাধ্য করছিলেন তিনি। ২০২২ সালের নভেম্বরে ফের মনসুর কাজ ছেড়ে দিলে স্বাতী তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে ব্ল্যাকমেল করতে থাকেন। বলেন, তিনি মনসুরের সন্তানের মা হতে চলেছেন। মনসুরের পরিবারের আরও দাবি, দু’জনের অন্তরঙ্গ ছবি দেখিয়ে মনসুরকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাতেন স্বাতী। রাতে মনসুরকে কাজে যেতে বাধ্য করতেন। বিয়ে করার জন্য চাপ দিতেন ক্রমাগত। মনসুর রাজি না হওয়াতেই স্বাতী ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
আজ পুলিশ স্বাতীকে পানবাজার মহিলা থানায় নিয়ে আসে। মনসুরের আত্মীয়স্বজন স্বাতীর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। স্বাতী অবশ্য এ দিনও দাবি করছেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন মনসুর।