বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই হাসপাতালেই ভর্তি মহিলা। প্রতীকী ছবি।
অসমের করিমগঞ্জে এক প্রসূতির পেট কেটে সন্তান বার করার সময় চিকিৎসক খেয়াল করেন ভ্রূণটি তখনও অপরিণত অবস্থাতেই রয়েছে। অতঃপর, আবার প্রসূতির পেট সেলাই করে দেন চিকিৎসক। বর্তমানে হাসপাতালে বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ওই মহিলা।
গত ২২ অগস্ট, করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে প্রসূতির অস্ত্রোপচার (সি-সেকশন) করছিলেন চিকিৎসক একে বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, পেট কাটার পর তিনি বুঝতে পারেন ভ্রূণটি এখনও পরিণত হয়নি। তাই তিনি আবার পেটে সেলাই করে দেন। বাড়ির লোকেদের তিনি এ কথা জানান এবং বলেন, আরও কিছু দিন হাসপাতালে রাখতে হবে প্রসূতিকে। ডিসেম্বরে তিনি আবার এক বার চেষ্টা করবেন।
সূত্রের খবর, প্রসূতি আরও ১০ দিন হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন। গত ৩১ অগস্ট তাঁকে ছাড়া হয়। কিন্তু বাড়ি ফিরতেই আবার শরীর খারাপ হতে থাকে মহিলার। তখন স্থানীয় বাসিন্দারা হাসপাতালে গিয়ে জবাবদিহি চাইলে অভিযোগ, ওই চিকিৎসক নিজেকে একটি ঘরে বন্দি করে নেন। ঘণ্টাখানেক পর ঘর থেকে বেরিয়ে তিনি গোটা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। ওই মহিলার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই হাসপাতালেই ভর্তি মহিলা।
ওই মহিলার স্বামী রাম নমশূদ্র জানিয়েছেন, পরীক্ষার বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী স্ত্রীর সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা ছিল ৯ ডিসেম্বর। কিন্তু চিকিৎসক ঝুঁকি নিয়ে সি-সেকশনের সিদ্ধান্ত নেন নির্ধারিত সময়ের সাড়ে তিন মাস আগেই।
এ দিকে অভিযুক্ত চিকিৎসকের দাবি, প্রসূতির পরিবারের লোকেরাই তাঁর কাছে এসে জানান, প্রসূতি প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছেন। যে করে হোক তাঁর যন্ত্রণা কমিয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘আমি জানতাম ডিসেম্বরের ওই মহিলার তারিখ। কিন্তু আমরা জটিল পরিস্থিতিতে এ রকম করে থাকি। আমি পরিবারের সম্মতি নিয়েই অস্ত্রোপচার শুরু করি। কিন্তু কিছু ক্ষণেই বুঝতে পারি, ভ্রূণটি অপরিণত অবস্থায় রয়েছে। তাই আমি আবার পেটে সেলাই করে দিই।’’
হাসপাতালের সুপার লিপি দেবসিংহ জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে ঠিক কী হয়েছে তা তদন্ত করে দেখতে সাত সদস্যের একটি দল তৈরি করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রসূতির পরিবারকে লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করার কথা বলা হয়েছে।