বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোয় অসম গণ পরিষদ (অগপ)-এ বিভাজন প্রকট হচ্ছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্ত প্রকাশ্যেই প্রতিবাদ জানিয়ে লোকসভা ভোটের সময় থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। দলের একাংশ নেতা নাগাড়ে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন দলত্যাগের হুমকি দিচ্ছেন। এর মধ্যেও অগপ শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে ঠিক কাজই করেছে দল। নিজেদের ক্ষমতায় দলের কাউকে রাজ্যসভায় পাঠানো সম্ভব ছিল না। বিজেপির সাহায্যে তা সম্ভব হওয়ায় তাদের ধন্যবাদ দেন অগপ মুখপাত্র রমেন্দ্র নারায়ণ কলিতা।
রাজ্যসভার মনমোহন সিংহ ও শান্তিয়াস কুজুরের মেয়াদ শেষ হলেও প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস ও এআইইউডিএফ। ওই দু’টি আসনে বিজেপির কামাখ্যাপ্রসাদ তাসা ও অগপর বীরেন্দ্রপ্রসাদ বৈশ্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছেন। বৈশ্য ২০০৮ থেকে ২০১৪ রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে অগপ-র তিন মন্ত্রী ইস্তফা দিয়ে শাসক জোট ছাড়লেও লোকসভা ভোটের মুখে তারা ফের জোটে ফিরে আসে। মন্ত্রীরাও পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেন। তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়। লোকসভায় বিজেপি অগপ-কে তিনটি আসন ছাড়লেও কোথাও তারা জিততে পারেনি। এর পরে রাজ্যসভায় একটি আসন অগপকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি। অগপ মন্ত্রী কেশব মহন্ত ও মুখপাত্র রমেন্দ্রনারায়ণের বক্তব্য, বিজেপি সাহায্য না-করলে ১২৬ সদস্যের বিধানসভা থেকে মাত্র ১৪ জন বিধায়ক নিয়ে অগপ কোনও ভাবেই রাজ্যসভায় সাংসদ পাঠাতে পারত না। তাই বিজেপি জোটে ফিরে এসে দল ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে।’’ বৈশ্য বিজেপিকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ রাজ্যসভায় সাধ্য মতো তুলে ধরব।’’
অন্য দিকে যুব নেতা তথা চা গোষ্ঠীর প্রতিনিধি কামাখ্যাপ্রসাদ তাসাকে কার্যত পুরস্কৃত করল বিজেপি। গত বারে যোরহাটের সাংসদ ছিলেন তিনি। এ বারে প্রার্থী করা হয় তপন গগৈকে। তাসা কোনও আপত্তি না-জানিয়ে তাঁর প্রচারে ঝাঁপান। তপনবাবু জিতেছেন। লোকসভায় বাদ পড়া তাসাও সাংসদ হলেন রাজ্যসভার। গত বারের অন্য যে চার লোকসভা সদস্যকে বিজেপি এ বারে লোকসভা ভোটে টিকিট দেয়নি, তাঁদের মধ্যে রামপ্রসাদ শর্মা ইতিমধ্যে দলের বিরুদ্ধে বহু কথা বলেছেন। বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়েছে গত বারের রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাইয়ের নাম। বাদ পড়া বাকি দু’জন বর্ষীয়ান। তাই তাসাই ছিলেন বিজেপির সর্বসম্মত প্রার্থী। তাসার মতে, রাজ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা বেকারত্ব। তাই রাজ্যে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের সম্ভাবনার উপরেই জোর দেবেন তিনি। এ ছাড়া, অসমে বন্যা, পর্যটন, আইন-শৃঙ্খলা, উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয় তিনি রাজ্যসভায় তুলে ধরতে চান।