অশোক লাভাসা। —ফাইল চিত্র।
তাঁর তত্ত্বাবধানেই আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সেই অশোক লাভাসা নির্বাচন কমিশন থেকে ইস্তফা দিলেন। ফিলিপিন্সের এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি)-র ভাইস প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হয়েছেন তিনি। গত ১৫ জুলাই আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই ঘোষণা করা হয়। তার প্রায় একমাস পর, মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন লাভাসা। আগামী ৩১ অগস্ট দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে এ দিন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে বাকি দুই নির্বাচন কমিশনারের মতো ক্লিনচিট দিতে আপত্তি করেছিলেন অশোক লাভাসা। নির্বাচনের পরেই লাভাসার স্ত্রী, ছেলে ও বোনের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগ আনে আয়কর দফতর। বৈদেশিক মুদ্রা আইন ভাঙার অভিযোগে লাভাসার ছেলে আবিরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে লাভাসা সততার মূল্য দিতে হচ্ছে বলে সেই সময় মন্তব্য করেছিলেন লাভাসা। তিনি বলেন, ‘‘সততার মূল্য দিতেই হয়। তার জন্য তৈরি থাকতে হবে। তাতে সরাসরি ব্যক্তিবিশেষের বা পারিপার্শ্বিক ক্ষতি হতে পারে। এ সবই সততারই অঙ্গ।’’
তার পরেও নির্বাচন কমিশনারের পদ ছাড়েননি লাভাসা। ২০২২-এর অক্টোবরে অবসর নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। তার আগে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন করানোর কথা ছিল তাঁর। আগামী দু’বছরে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, মণিপুর, গোয়া-সহ আরও বেশ কিছু রাজ্যের নির্বাচনের দায়িত্বও ছিল তাঁর হাতে। কিন্তু গত মাসে আচমকাই এডিবি-র পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ ও পাবলিক সেক্টর অপারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর নিযুক্তির কথা জানা যায়।
আরও পড়ুন: করোনা-লড়াই দুর্বল করে দিতে চাইছেন রাহুল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর রাহুলকে তোপ বিজেপির
আরও পড়ুন: ‘পিএম কেয়ার্স’-এর অর্থ জাতীয় ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করা যাবে না: সুপ্রিম কোর্ট
ফিলিপিন্সের ওই ব্যাঙ্কটিতে এই মুহূর্তে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদে রয়েছেন আর এক ভারতীয়, দিবাকর গুপ্ত। আগামী ৩১ অগস্ট তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে ভারত সরকারের তরফে অশোক লাভাসার নাম সুপারিশ করা হয়। তার পরই সংস্থার তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ওই ব্যাঙ্কে লাভাসার নিযুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, বাংলা-সহ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বিজেপিকে যাতে কোনও বাধার মুখে না পড়তে হয়, তার জন্যই পরিকল্পনামাফিক লাভাসাকে নির্বাচন কমিশনারের পদ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। তবে এ নিয়ে লাভাসা বা তাঁর পরিবারের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।