অশোক লাভাসা
আগামী বছর যাঁর তত্ত্বাবধানে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, সেই অশোক লাভাসা নির্বাচন কমিশন ছেড়ে যোগ দিতে চলেছেন এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি)-এ।
গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে বাকি দুই নির্বাচন কমিশনারের মতো ক্লিনচিট দিতে আপত্তি করা লাভাসার আগামী বছর মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়াদ শেষের প্রায় দু’বছর আগেই সরে গেলেন তিনি। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ-সহ উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, গোয়ার মতো একাধিক রাজ্যে তাঁর তত্ত্বাবধানে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
আজ এডিবি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দিবাকর গুপ্তের জায়গায় নিয়োগ করা হয়েছে লাভাসাকে। সংস্থার পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ ও পাবলিক সেক্টর অপারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁকে। গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে মোদী ও শাহের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগে একাধিক বার সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। কমিশনের তিন সদস্যের মধ্যে মুখ্য নির্বাচন কমিশন সুনীল আরোরা ও আর এক নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র বিজেপির দুই শীর্ষ নেতাকে ‘ক্লিন চিট’ দেওয়ার পক্ষে মত দিলেও, বিরোধিতা করেন লাভাসা। অন্তত ছ’বার বৈঠকে নিজের মতপার্থক্য জানান লাভাসা। যদিও বাকি দুই কমিশনার তা না মানায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নির্বাচনের পরেই লাভাসার স্ত্রী, ছেলে ও বোনের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগ আনে আয়কর দফতর। বৈদেশিক মুদ্রা আইন ভাঙার অভিযোগে লাভাসার ছেলে আবিরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে লাভাসা পরিবার।
হরিয়ানা ক্যাডারের ওই আমলা কেন্দ্রীয় অর্থসচিব হিসাবে অবসর নিয়ে ২০১৮ সালে ২৩ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনার হন। তিন কমিশনারের মধ্যে বর্তমানে ক্রমতালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভাসার আগামী বছর মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত। প্রসঙ্গত, আগামী বছর নির্বাচন হওয়ার কথা পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, পঞ্জাব, মণিপুরে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও পঞ্জাব বাদে বাকি সব রাজ্যেই ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। অমিত শাহেরা যেমন এক দিকে জেতা রাজ্য ধরে রাখতে মরিয়া তেমনি পঞ্জাব ও পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখলেও সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা।