ছবি সংগৃহীত।
বিহারে বিজেপি জোট কোনও ভাবে জিতেছে আসাদুদ্দিন ওয়েইসির সৌজন্যে। ওয়েইসির মুসলিম ভোটে বিভাজন মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছিল তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের। পশ্চিমবঙ্গেও ঠিক সে ভাবেই মুসলিম ভোটে আড়াআড়ি বিভাজন করতেই যে হায়দরাবাদের বিতর্কিত নেতা ওয়েইসিকে মাঠে নামানো হয়েছে, তা প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিলেন বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ। কাল তিনি বলেন, “আশা করছি বিহারের পরে আসাদুদ্দিনের দল এমআইএম পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ও উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত ভোটেও আমাদের সাহায্য করবে। আসাদুদ্দিনকে অনেক ধন্যবাদ। ঈশ্বর তাঁকে আরও শক্তি দিন।” শুনে তৃণমূলের বক্তব্য, বিজেপি ও এমআইএমের বোঝাপড়া দীর্ঘ দিনের। মুসলিম ভোট কেটে বিজেপিকে সুবিধে দিতেই ময়দানে নামেন আসাদুদ্দিন।
বিজেপি বিরোধী ভোট ব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়ে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের সুবিধে করে দেন, আসাদুদ্দিনের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ নতুন নয়। বিহারের ফলের পরে ঘনিষ্ঠ মহলে একাধিক বিজেপি নেতা স্বীকার করেন, আসাদুদ্দিন ভোট না-কাটলে বিজেপির ক্ষমতায় ফেরা কঠিন ছিল। গত কাল দলীয় একটি অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যমের সামনে সেই কথাটিই প্রকাশ্যে বলে দিলেন সাক্ষী মহারাজ।
বিহারে জেতার পরেই এমআইএম জানায়, তাদের পরবর্তী লক্ষ্য হল পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ফল করে ভিন রাজ্যে সংগঠনকে মজবুত করা। সম্প্রতি বাংলায় এসে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করে জোট নিয়ে একপ্রস্থ কথা বলে গিয়েছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির সঙ্গে জোট করেছেন ওয়েইসি। অভিযোগ, সপা-র মুসলিম ও বিএসপি-র দলিত ভোট কাটতেই ওই জোটকে মাঠে নামান শাহেরা।
বিজেপি ভালই জানে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় যে ৩০ শতাংশের বেশি মুসলিম ভোটের গোটাটাই তৃণমূলের ঘরে গেলে নবান্নের দখল এ বারেও অধরা থেকে যাবে। তৃণমূলের অভিযোগ, তাই মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক ভাঙতে ওয়েইসির মতো নেতাদের রাজ্যে মদত দিচ্ছে বিজেপি। শাসক শিবিরের অভিযোগ, বিজেপি এমন একটি বার্তা দিতে চাইছে, যে রাজ্যের মুসলমান সমাজের উপকার করতে এমআইএম পশ্চিমবঙ্গে আসছে। ঘটনাচক্রে গত কালই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পশ্চিমবঙ্গে ওয়েইসির নির্বাচনে লড়াকে সমর্থন করেছেন।