এমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। ছবি: পিটিআই।
লোকসভা নির্বাচনের আগে কে চন্দ্রশেখর রাও, মায়াবতীর কাছে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের আহ্বান জানালেন এমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। ওয়েইসির এই আহ্বানকে বিজেপি-বিরোধী ভোটে ভাঙন ধরিয়ে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে সুবিধা করে দেওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবেই দেখছে কংগ্রেস।
তেলঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের বিআরএস-কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কংগ্রেস হায়দরাবাদে দু’দিনের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে রবিবার সন্ধ্যায় ‘বিজয় ভেরি জনসভা’ করেছে। লক্ষ মানুষের সমাবেশ থেকে সনিয়া, রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গেরা বিআরএস-সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তেলঙ্গানায় কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ছয়টি প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনের পরে বিআরএস-এর সঙ্গে হাত মেলানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধী জনসভায় বলেছেন, ‘‘বিজেপি, বিআরএস, এমআইএম আসলে একই। কংগ্রেস তেলঙ্গানায় এই তিন দলের বিরুদ্ধেই লড়বে।’’
পাল্টা জবাবে আজ বিআরএস কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিকে ‘কোরাপ্ট ওয়ার্কিং কমিটি’ বলে আখ্যা দিয়ে প্রচারে নেমেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হায়দরাবাদের ‘মুক্তি দিবস’ উদযাপন করতে তেলঙ্গানায় পৌঁছেছেন। অন্য দিকে এমআইএম-প্রধান ওয়েইসি আজ জানিয়েছেন, তিনি তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী, বিআরএস দলের প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কাছে মায়াবতীর বিএসপি, উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে হিন্দি বলয়, মহারাষ্ট্রের ছোট ছোট দলকে নিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের অনুরোধ জানিয়েছেন।
কংগ্রেস নেতৃত্ব অভিযোগ তুলেছেন, বিজেপি, বিআরএস ও এমআইএম মিলে তাদের তেলঙ্গানায় ক্ষমতা আসা আটকাতে চাইছে। সেই কারণে অমিত শাহ মহারাষ্ট্রের কর্মসূচি বাতিল করে হায়দরাবাদে চলে এসেছেন। বিআরএস কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচারে নেমেছে। ওয়েইসি-ও জনসভা ডেকেছেন।
বিরোধীদের জোট ইন্ডিয়া গঠনের পরে বস্তুত এই প্রথম কেউ তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের দাবি তুললেন। কে সি রাও এর আগেও কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমারদের সঙ্গে বৈঠক করে তৃতীয় ফ্রন্টের জল্পনা উস্কে দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। অধিকাংশ বিরোধী দলই ইন্ডিয়া-য় যোগ দিয়েছে।
অমিত শাহ আজ হায়দরাবাদে মুক্তি দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানে অভিযোগ তুলেছেন, ব্রিটিশ শাসন শেষ হওয়ার পরে নিজ়ামরা হায়দরাবাদের মানুষের উপরে অত্যাচার চালিয়েছিল। সর্দার বল্লভভাই পটেল ১৯৪৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নিজ়ামদের হাত থেকে হায়দরাবাদকে মুক্ত করেন। কিন্তু সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতির জন্য এত দিন কেউ হায়দরাবাদ দিবস পালন করেননি। অমিত শাহ শনিবারই বিহারে গিয়ে নীতীশ কুমারের সঙ্গে লালুপ্রসাদ-তেজস্বী যাদবদের জোটকে তেল-জলের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। নীতীশ বিরোধী জোট ইন্ডিয়া থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন বলে জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন।