এগোচ্ছে ঝড়, কেন্দ্র জানাল পাশেই আছি

বুলবুলের মোকাবিলায় সতর্কবার্তা পাঠিয়ে কেন্দ্র আশ্বাস দিয়েছে, তারা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির পাশে আছে। সব রকম সাহায্য মিলবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪০
Share:

—ফাইল চিত্র

আঁতুড় থেকেই হুঙ্কার চলছিল তার। বঙ্গোপসাগরে জন্ম নিয়ে চোখরাঙানি সমানে চালিয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। বৃহস্পতিবার রাতেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়েছে সে। আবহাওয়া দফতর জানায়, শনিবার গভীর রাতে বা রবিবার ভোরে সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝামাঝি আছড়ে পড়তে পারে বুলবুল। উপগ্রহ-চিত্র দেখে অনুমান করা হচ্ছে, এ রাজ্যের উপকূল ঘেঁষে বাংলাদেশে চলে যেতে পারে ঝড়।

Advertisement

বুলবুলের মোকাবিলায় সতর্কবার্তা পাঠিয়ে কেন্দ্র আশ্বাস দিয়েছে, তারা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির পাশে আছে। সব রকম সাহায্য মিলবে। এ দিন উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র জানান, প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষতি যাতে যথাসম্ভব কমানো যায়, তার জন্য উপকূলবর্তী রাজ্যগুলিকে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘূর্ণিঝড় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পরেই এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়। ভিডিয়ো-সম্মেলনের মাধ্যমে সেই বৈঠকে যোগ দেন ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও আন্দামান-নিকোবরের কর্তারা।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, বুলবুল বাংলায় আসবে না বলেই মনে হচ্ছে। উপকূলের দিকে এগিয়ে ঝড় বাংলাদেশের দিকে বাঁক নেবে। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, বুলবুল এ রাজ্যে আছড়ে না-পড়লেও উপকূলীয় জেলাগুলিতে তার প্রভাব পড়বে। শনিবার ওই সব জেলায় জোরালো বৃষ্টি হতে পারে। উপকূলে অতিবৃষ্টির আশঙ্কাও আছে। আজ, শুক্রবার রাতে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করবে। রবিবার সকালে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝড়।

Advertisement

হাওয়া অফিসের খবর, ঝড়ে উপকূল এলাকায় কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি নষ্ট হতে পারে। বিপদ এড়াতে আজ থেকেই সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া বন্ধ হচ্ছে। যে-সব ধীবর সমুদ্রে রয়েছেন, দ্রুত ফেরার বার্তা পাঠানো হয়েছে তাঁদের কাছে। শনি ও রবিবার সৈকত পর্যটন বন্ধ থাকছে। কেন্দ্রের তরফে সংশ্লিষ্ট সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের জানানো হয়েছে, উপকূলবর্তী অঞ্চলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রাখতে হবে। ২৪ ঘণ্টা নজরদারির চালাতে হবে জেলাগুলির পরিস্থিতির উপরে। যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেলকে। সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে নৌবাহিনীর কাছেও।

সাগরজলের তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁলেই ঘূর্ণিঝড়ের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়। আবহবিদদের হিসেব অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে জলের তাপমাত্রা ২৮ থেকে ২৯ ডিগ্রির কাছাকাছি রয়েছে। জলের উষ্ণতা বেশি থাকায় বুলবুলের শক্তি বাড়বে। দু’বছর ধরে সাগরে জলতলের উষ্ণতা বেশি থাকছে। তার ফলেই পরপর তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। বুলবুলকে ধরলে চলতি বছরে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement