অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি: পিটিআই।
নির্মীয়মাণ একটি উড়ালপুল। থামের গায়ে গাছের কয়েকটা ডাল ঠেকিয়ে কোনও রকমে বেয়ে ওঠার মতো একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার উপর দিয়ে ঠেলে-টেনে চলছে উদ্ধারকাজ। কাঁদতে থাকা বালক, কাঁধে পোষ্য কুকুরকে নিয়ে কিশোর— সবাই উঠছে। নীচে রাস্তা হয়ে গিয়েছে নদী। ধুঁকতে থাকা যমুনা এ বার বর্ষায় ফুঁসে উঠে চার দশকের রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে বুধবার। বানের জলে ভাসছে রাজধানী। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জি২০ সম্মেলন। সে কথা উল্লেখ করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে লেখা চিঠিতে ‘হাতে হাত মিলিয়ে কাজ’ করার কথা বলেছেন।
১৯৭৮ সালের বর্ষায় দিল্লিতে যমুনার জলস্তর ২০৭.৪৯ মিটার ছুঁয়েছিল। এ বার ২০৫.৩৩ মিটারের বিপদসীমা ছাপিয়ে গিয়েছিল মঙ্গলবারই। আশঙ্কা সত্যি করে, বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ দিল্লি রেলসেতুর কাছে যমুনায় জলস্তর ওঠে ২০৭.৫৫ মিটারে। গত ৪৫ বছরে যা সর্বোচ্চ। কেন্দ্রীয় জল কমিশন জানিয়েছে, রাত ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে তা পৌঁছনোর সম্ভাবনা ২০৭.৭২ মিটারে। তবে তার পরে আর বাড়ার পূর্বাভাস আপাতত নেই।
অমিত শাহকে লেখা চিঠিতে কেজরীওয়াল জানিয়েছেন, গত তিন দিন দিল্লিতে বিশেষ বৃষ্টি হয়নি। হরিয়ানার হাথনিকুণ্ড বাঁধ থেকে যথাসম্ভব কম হারে জল ছাড়ার আর্জি করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী গজেন্দ্র শেখাওয়াতের কাছেও আর্জি করা হয়েছে, হিমাচল থেকে হরিয়ানায় জল ছাড়া কমানোর জন্য। বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে দিল্লি পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করেছে। তবে রাজধানীর পূর্তমন্ত্রী অতিশী মারলেনা দাবি করেছেন, ত্রাণ শিবিরে যথেষ্ট পরিকাঠামো প্রস্তুত রয়েছে।
পরিস্থিতি ভাল নয় উত্তরের আরও বেশ কয়েকটি রাজ্যে। হরিয়ানা সরকার জানিয়েছে, বৃষ্টিতে এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। উদ্ধার করা হয়েছে হিমাচলপ্রদেশের কসোলে আটকে থাকা হাজার দুয়েক পর্যটককে। হিমাচলপ্রদেশে বৃষ্টি কমতে শুরু করলেও ধসের খবর আসছে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। পঞ্জাব আর হরিয়ানায় ভিটেছাড়া প্রচুর মানুষ। তীর্থযাত্রী ও রাজ্যবাসীকে খুব দরকার না-পড়লে উত্তরাখণ্ড সরকার সফর না-করতে বলেছে। বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের বিস্তীর্ণ এলাকাও।