মঙ্গলবার নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক অরবিন্দ কেজরীওয়ালের। ফাইল চিত্র।
বিরোধী ঐক্যে শান দিতে এ বার কলকাতায় আসছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। মঙ্গলবার দুপুরে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। দুই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে অবধারিত ভাবেই বিরোধী জোট গঠনের প্রসঙ্গ উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। রবিবাসরীয় সকালে হঠাৎই কেজরীওয়ালের বাড়িতে যান বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, জেডি (ইউ) নেতা মনোজ ঝা, লালন সিংহ এবং সঞ্জয় ঝা। কেন্দ্রের দিল্লি সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স জারির বিরোধিতা করে কেজরীর পাশে দাঁড়ান নীতীশ। শনিবারই অবশ্য এই বিষয়ে সব বিরোধী দলকে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন আপ প্রধান। তার পরেই নীতীশের সফর এবং কেজরীওয়ালের কলকাতা সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
নবান্নের তরফে এই বৈঠক প্রসঙ্গে এখনও কিছু না জানানো হলেও আপ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে কলকাতায় আসবেন কেজরীওয়াল। দুপুরে নবান্নে বৈঠক করবেন মমতার সঙ্গে। ওই দিনই তাঁর দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা। তবে তিনি রাজ্যে আপের কোনও কর্মসূচিতে যোগ দেবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর কাজ শুরু হয়েছিল আগেই। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব, কেজরীওয়াল, মমতা, এসপি নেতা অখিলেশ যাদবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন নীতীশ। মমতার প্রস্তাব মেনে পটনায় বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে একটি বৈঠক হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিপুল সাফল্যের পর বিরোধী জোট গঠনের প্রক্রিয়া আরও গতি পায়। সিদ্দারামাইয়ার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বাছাই করা কিছু বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয় কংগ্রেসের তরফে। আমন্ত্রিত দলের তালিকায় তৃণমূল, বামেরা থাকলেও ছিল না আপের নাম। দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস আপকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে আপত্তি জানায় বলে জানা যায় কংগ্রেসের একটি সূত্রে।
বিরোধী জোটে কংগ্রেসের নেতৃত্ব স্বীকার করার প্রশ্নে গোড়া থেকেই নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছে আপ এবং তৃণমূল। অন্য দিকে জাতীয় রাজনীতিতে মমতা এবং কেজরীওয়াল— দুই মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁদের দলের ‘বোঝাপড়া’র দিকটিও বহু বার প্রকাশ্যে এসেছে। নীতি আয়োগের বৈঠকে আগামী ২৬ মে দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে জানা যায়, ওই দিল্লি সফরেই কেজরীওয়াল-সহ অন্য বিরোধী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। রবিবার জানা যায়, মমতার দিল্লি সফরের আগেই হতে চলেছে কেজরীওয়ালের কলকাতা সফর।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে পাশ কাটিয়ে দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতার রাশ হাতে রাখতে শুক্রবার গভীর রাতে অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) জারি করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। শনিবার সকাল থেকেই সেই অধ্যাদেশ ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বিকেলে এই বিষয়ে মুখ খুলে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আপ প্রধান বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অপমান করা হচ্ছে।” বিষয়টিকে ‘খুব খারাপ মানের মশকরা’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। এই অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে সব বিরোধী দলকে একজোট হওয়ারও ডাক দেন তিনি।