সাংবাদিকদের মুখোমুখি নীতীশ কুমার এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি: পিটিআই।
অর্ডিন্যান্স নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে টানাপড়েন চলছে দিল্লির আপ সরকারের। এই আবহে হঠাৎই রবিবাসরীয় সকালে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বাসভবনে উপস্থিত হলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, জেডি(ইউ) নেতা মনোজ ঝা, লালন সিংহ এবং সঞ্জয় ঝা। দিল্লির ফ্ল্যাগ স্টাফ রোডে কেজরীওয়ালের বাসভবনে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয় বৈঠক।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে কেজরীওয়ালকে পাশে নিয়ে নীতীশ বলেন, “কী ভাবে একটা নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া যেতে পারে? এটা সংবিধানের বিরোধী। আমরা সকলে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গে আছি।” বিরোধী জোট গঠন প্রসঙ্গে রবিবারও নীতীশ জানান, সব বিরোধী দলকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার চেষ্টা হচ্ছে। কেজরীওয়াল নীতীশের সঙ্গে বৈঠকের পর বলেন, “যদি বিজেপি অর্ডিন্যান্সকে বিল হিসাবে সংসদে পাস করাতে চায়, তবে সব বিজেপি বিরোধী দল ওই বিলের বিরুদ্ধে রাজ্যসভায় একজোট হবে। যদি এমন কিছু হয়, তবে বিজেপিকেও একটা বার্তা দেওয়া যাবে।”
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে পাশ কাটিয়ে দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতার রাশ হাতে রাখতে শুক্রবার গভীর রাতে অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) জারি করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। শনিবার সকাল থেকেই সেই অধ্যাদেশ ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বিকেলে এই বিষয়ে মুখ খুলে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আপ প্রধান বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অপমান করা হচ্ছে।” বিষয়টিকে ‘খুব খারাপ মানের মশকরা’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। এই অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে সব বিরোধী দলকে একজোট হওয়ার ডাক দেন তিনি। তার পরের দিনই কেজরীওয়ালের ‘পাশে থাকতে’ তাঁর বাড়ি গেলেন বিরোধী জোটের অন্যতম দূত নীতীশ।
গত ১১ মে সুপ্রিম প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। কিন্তু শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ অর্ডিন্যান্স এনে ১০ পাতার গেজ়েট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ ও বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। (দিল্লির) মুখ্যমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারপার্সন। কিন্তু কমিশনে কেন্দ্র এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রতিনিধিদের সংখ্যা বেশি থাকায় তাঁরাই নির্ণায়ক হবেন।