অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় চতুর্থ বারের জন্য ইডির সমন এড়াতে পারেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। বৃহস্পতিবার দুপুরে দিল্লির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর গোয়ার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা তাঁর। কেজরীওয়ালের সফরসঙ্গী হতে পারেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। যদিও কেজরীওয়ালকে বৃহস্পতিবারই তাদের দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইডি। এর আগে তিন বার সমন পাঠালেও প্রতি বারই হাজিরা এড়ান আপের প্রধান।
এর আগে কেজরীওয়ালকে চতুর্থ সমনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছিলেন, “আইন অনুযায়ী যা করার করা হবে।” কেজরীওয়াল কিংবা আপের তরফে হাজিরা এড়ানোর বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু না জানানো হলেও আপ সূত্রে খবর, দুপুরেই গোয়ার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন দিল্লি এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভা ভোটের আগে সে রাজ্যে আপের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতেই তাঁদের এই সফর বলে ওই সূত্রে জানা গিয়েছে। গোয়ায় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একটি জনসভাও করতে পারেন কেজরীওয়াল। দিল্লি সরকারের এক পদস্থ আধিকারিকও জানান যে, বৃহস্পতিবার কেজরীওয়ালের গোয়া সফর পূর্বনির্ধারিত ছিল।
শেষ বার গত ২২ ডিসেম্বর কেজরীওয়ালকে সমন পাঠিয়ে গত ৩ জানুয়ারি ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। কিন্তু সে বারেও হাজিরা এড়ান আপ প্রধান। তার আগে তাঁকে গত ২ নভেম্বর এবং ২১ ডিসেম্বর তলব করে দু’টি নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও বারেই ইডির সামনে হাজির হননি তিনি। উল্টে প্রশ্ন তুলেছেন, দু’বছর ধরে আবগারি দুর্নীতির মামলা চললেও কেন সিকি পয়সাও উদ্ধার করতে পারেননি তদন্তকারীরা? কেন লোকসভা ভোটের আগেই বার বার সমন পাঠানো হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া এবং আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহকে আগেই গ্রেফতার করেছে ইডি। ফলে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি বার বার সমন পাঠানোর পরে কেজরীওয়ালের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা। প্রসঙ্গত, ওই মামলায় আদালতে জমা দেওয়া দ্বিতীয় চার্জশিটে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর নাম উল্লেখ করেছিল ইডি। যা দেখে সরকারি মহলের একাংশের ধারণা, ক্রমশ ‘বৃত্ত’ ছোট করে আনছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। আপ নেতৃত্ব আগেই অভিযোগ তুলেছিল, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে কেজরীকে গ্রেফতারের ছক কষেছে ইডি। তাই শেষ পর্যন্ত কেজরী ইডি-র ডাকে সাড়া দেবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছিলই।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ এপ্রিল আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীওয়ালকে প্রায় সাড়ে ন’ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল আর এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। পরে এই মামলায় বেআইনি আর্থিক লেনদেনের খোঁজ পেতে সমান্তরাল তদন্ত শুরু করে ইডি। প্রসঙ্গত, আপ সরকারের আমলে আবগারি নীতি বদলে ফেলে কয়েকটি সংস্থাকে বেআইনি ভাবে সুযোগ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বিতর্কের জেরে ২০২২ সালে নয়া আবগারি নীতি বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছিল দিল্লির আপ সরকার।