(বাঁ দিকে) তিহাড় জেল এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
আবার খবরে আম। আম অর্থাৎ, অমৃতফল। পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হিন্দি ছবির সুপারস্টার অক্ষয় কুমার প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘আম তিনি কী ভাবে খান? চুষে? না ছুলে?’’
মিঠে সেই সাক্ষাৎকারে মোদী কী জবাব দিয়েছিলেন, তা এত দিন পরে অনেকেরই আর মনে নেই। কারণ, আলোচনা বেশি হয়েছিল অক্ষয়ের প্রশ্ন নিয়ে।
পাঁচ বছর পরে আরেকটি লোকসভা ভোটের মুখে আম আবার আলোচনায়। এবং কাকতালীয় ভাবে, যাঁর কল্যাণে, তাঁর সঙ্গেও ‘আম’ জড়িত। তবে ফল হিসেবে নয়। ‘জনতা’র বিশেষণ হিসেবে। আমজনতা। আম আদমি। সেই আম আদমি পার্টির অবিংসবাদী নেতা তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল আপাতত তিহাড় জেলে বন্দি। সেখানে বসে তিনি নাকি গুচ্ছের আম খাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার আদালতে এমনই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)।
এবং ইডির দাবি, কেজরীওয়াল নাকি ‘ইচ্ছাকৃত’ ভাবে বেশি করে আম খাচ্ছেন! তিহাড়ে বন্দি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিরিক্ত চিনি দিয়ে চা-ও খাচ্ছেন। সঙ্গে মিষ্টিও।
তাঁর রক্তে শর্করার পরিমাণ (ব্লাড সুগার লেভেল) নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা হোক— এমন আর্জি নিয়ে দিল্লির একটি নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধান কেজরীওয়াল। সঙ্গে এই আর্জিও জানিয়েছিলেন যে, তাঁকে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করার সুযোগ দেওয়া হোক। বৃহস্পতিবার সেই মামলারই শুনানি চলছিল আদালতে। শুনানি পর্ব চলার সময়ে ইডির বিশেষ কৌঁসুলি জ়োহেব হোসেন হঠাৎই উঠে দাঁড়িয়ে জানান, ব্লাড সুগার বৃদ্ধি করার জন্য জেলে ইচ্ছাকৃত ভাবে বেশি মিষ্টি আর আম খেয়ে যাচ্ছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। ইডির আরও দাবি, নিজের ব্লাড সুগারের মাত্রায় তারতম্য ঘটছে, এমনটা দেখিয়েই জামিন নিশ্চিত করতে চাইছেন দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া কেজরীওয়াল।
যদিও কেজরীওয়ালের আইনজীবী বিবেক জৈন ইডির দাবি খারিজ করে দিয়ে পাল্টা দাবি করেছেন যে, কেবল সংবাদমাধ্যমের নজর কাড়ার জন্যই এই সমস্ত মন্তব্য করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। তবে বৃহস্পতিবার কেজরীওয়াল তাঁর আবেদনটি প্রত্যাহার করে নেন। জানান, পরে আবার এই নিয়ে নতুন করে আবেদন জানাবেন তিনি।
তবে কেজরীওয়াল তিহাড়ে আম চুষে খাচ্ছেন না ছুলে, তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য হয়নি দিল্লির আদালতে সওয়াল-জবাবের সময়।
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত জেল কর্তৃপক্ষের কাছে কেজরীওয়ালের খাবারদাবার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে। শুক্রবারই এই রিপোর্ট খতিয়ে দেখতে চায় আদালত। ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর কেজরীওয়াল বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন। নিম্ন আদালত তাঁর জেল হেফাজতের মেয়াদ ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে।