অমৃতসরে শোভাযাত্রায় আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং পঞ্জাবের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান। রবিবার। ছবি পিটিআই।
পঞ্চনদীর তীরে আপ-ঝড়ে ধুলিসাৎ সব দল। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পঞ্জাবে সরকার গড়তে চলেছে আম আদমি পার্টি (আপ)। অমৃতসরে আজ বিজয় মিছিল করল তারা। বহরে এবং চাকচিক্যে রীতিমতো নজর কেড়েছে আপের এই মিছিল। উপস্থিত ছিলেন আপের জাতীয় আহ্বায়ক তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছিলেন রাজ্যের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান-সহ পঞ্জাবের আপ নেতৃত্ব। মিছিলের পরে কেজরীওয়ালের ঘোষণা, পঞ্জাব এক জন সৎ মুখ্যমন্ত্রী পেতে চলেছে। দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না।
দলের বিপুল জয়ের পর থেকে পঞ্জাবে আপের কর্মী-সমর্থকেরা আনন্দে মাতোয়ারা। আজ বিজয় মিছিলে সেই উচ্ছ্বাস ছিল লাগামছাড়া। দলের পতাকা, পোস্টার-প্ল্যাকার্ড-সহ মিছিলে শামিল হন আপের কর্মী-সমর্থকেরা। জাতীয় পতাকার সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো। সঙ্গে ভাঙড়া নাচ। একটি গাড়ির উপরে দাঁড়িয়ে হাত নাড়তে নাড়তে মিছিলে আগত সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কেজরীওয়াল এবং মান। রাজ্যবাসীর উদ্দেশে কেজরী বলেন, ‘‘আপনারা কামাল করে দিয়েছেন!’’
নিজের বক্তব্যে পঞ্জাবের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী মানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন কেজরীওয়াল। তিনি বলেন, ‘‘আমি খুবই আনন্দিত যে বহু বছর পরে পঞ্জাব এক জন সৎ মুখ্যমন্ত্রী পাচ্ছে। যিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন তিনি এক জন অসম্ভব সৎ মানুষ। একটি সৎ, দুর্নীতি মুক্ত সরকার গঠিত হবে।’’ কেজরী জানিয়েছেন, নির্বাচনে আপ যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা সরকার পূরণ করবে। দুর্নীতির সঙ্গে কোনও অবস্থাতেই আপস করা হবে না। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘কোনও আপ নেতা বা বিধায়ক যদি অন্যায় করেন বা দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেন, তা হলে তাঁকে জেলে যেতে হবে।’’
পঞ্জাবের মানুষ এ বার জয়ের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছে কেজরীওয়ালের দলকে। ১১৭টি আসনের মধ্যে ৯২টি আসন জিতেছে তারা। কংগ্রেস পেয়েছে ১৮টি, শিরোমণি অকালি দল তিনটি এবং বিজেপি দু’টি। আপ-ঝড়ে প্রবীণ অকালি নেতা প্রকাশ সিংহ বাদল, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরমেন্দ্র সিংহ, মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নীর মতো প্রথমসারির নেতারা ধরাশায়ী। এ বারের ভোটপ্রচারে আপের অন্যতম বিষয়ই ছিল দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন। স্বভাবতই দুর্নীতিকে কোনও ভাবে যে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না, তা বার বার বলতে হয়েছে কেজরী এবং মানকে।
পঞ্জাবের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী আজ জানিয়েছেন, সরকারকে মানুষের দরজায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি। যাতে আমজনতাকে যে কোনও দরকারে চণ্ডীগড়ে ছুটে আসতে না হয়। তাঁর কথায়, ‘‘ভোট চাইতে আপনাদের দরজায়-দরজায় গিয়েছিলাম। এমনকি, মাঠে গিয়েও কৃষকদের ভোট চেয়েছি। আমরা চাইছি, প্রশাসন তার কাজ মানুষের কাছে পৌঁছে দিক। নিজেদের কাজের জন্য যাতে মানুষকে চণ্ডীগড়ে আসতে না হয়।’’