ফেরা: নিজের দফতরে অরুণ জেটলি। বৃহস্পতিবার। পিটিআই
অর্থ ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্বে ফিরলেন অরুণ জেটলি। কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রায় তিন মাস পরে।
অটলবিহারী বাজপেয়ীর মৃত্যুর জন্য বুধবার পর্যন্ত জাতীয় শোক চলছিল। তা শেষ হতেই, বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মতো রাষ্ট্রপতি জেটলিকে অর্থ ও কর্পোরেট মন্ত্রী নিযুক্ত করলেন। এত দিন পীযূষ গয়াল ওই মন্ত্রকগুলির দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। তিনি এখন থেকে শুধু রেল ও কয়লা মন্ত্রকের দায়িত্বেই থাকবেন।
বেলা ১১টায় নর্থ ব্লকে এসে আজ জেটলি সচিব, আর্থিক উপদেষ্টাদের সঙ্গে পরিস্থিতি যাচাই করতে বৈঠকে বসেন। সংক্রমণের ভয়ে বাকিদের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব রেখেই বসেছিলেন তিনি। নর্থ ব্লকের দোতলার কোণে অর্থমন্ত্রীর ঘরটিও সংক্রমণমুক্ত করা হয়েছে। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে চিকিৎসকরা জেটলিকে বৈঠক বা অনুষ্ঠানে যতটা সম্ভব কম যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর ঘরে ঢুকতে হলেও হাসপাতালের মতো করে জুতো ঢেকে ঢোকার নিয়ম হয়েছে।
আজ আড়াই ঘণ্টা দফতরে কাটিয়ে বাড়ি ফিরে যান জেটলি। তার মধ্যে ছেলে রোহন এসে খোঁজ নিয়ে যান। টুইটে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে জেটলির প্রত্যাবর্তন অবশ্য বেশ কঠিন পরিস্থিতিতেই হল। ডলারের তুলনায় টাকার দর পড়ছে। বাড়ছে বাণিজ্যিক ঘাটতি। বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতিও মাত্রা ছাড়ানোর আশঙ্কা। এদিকে, ভোটের আগে তাঁকে সরকারি প্রকল্পগুলিতে অর্থ খরচের গতি বাড়াতে হবে। এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রির কাজ থমকে যাওয়ায় বিলগ্নিকরণের লক্ষ্য পূরণ হবে কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে। জিএসটি থেকে আয়, কেরলের অর্থসাহায্যের দাবিও
চিন্তার কারণ।
সূত্রের খবর, অর্থমন্ত্রী হিসেবে জেটলির প্রথম বড় বৈঠক হবে আগামী মাসের শুরুতে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে। নর্থ ব্লকের এক কর্তা বলেন, ‘‘টাকার দর, রাজকোষ ঘাটতি এবং ভোটের আগে শেষ বছরে আর্থিক বৃদ্ধিকে উঁচু মাত্রায় রাখাই অর্থমন্ত্রীর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।’’
গত ১৪ মে অস্ত্রোপচারের পর ৪ জুন এইমস থেকে ছাড়া পান জেটলি। তারপর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন। তবে ভিডিয়ো কনফারেন্সে ১ জুলাই জিএসটি-র বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এই তিন মাসে মাত্র এক দিনই, গত ১০ অগস্ট সংসদে এসেছিলেন, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানের পদে ভোটাভুটিতে।
ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী হিসেবে পীযূষ গয়ালের আমলে ইতিমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বহু পণ্যে কমানো হয়েছে জিএসটি-র হার। ব্যাঙ্কের আমানত সুরক্ষা বিল প্রত্যাহার করে নিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। অনাদায়ী ঋণের সমস্যার সমাধানে দেউলিয়া আইনে সংশোধন হয়েছে, এসেছে সশক্ত প্রকল্প। আর এলআইসি অধিগ্রহণ করেছে রুগ্ণ আইডিবিআই-কে।