জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। —ফাইল চিত্র
ফোন লাইন চালু রাখা, নাকি প্রাণহানি আটকানো, কোনটা বেশি প্রয়োজন? এই প্রশ্নে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন দ্বিতীয় বিকল্পকেই বেছে নিয়েছে বলে জানালেন সত্যপাল মালিক। দিল্লিতে প্রয়াত অরুণ জেটলির শেষকৃত্যে যোগ দিয়ে জম্মু কাশ্মীরের রাজ্যপাল বললেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবের চেয়ে মানুষের মৃত্যু রোখা বেশি ভাল। উপত্যকায় খাবার ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর যোগানের অভাব নেই বলেও দাবি করেছেন সত্যপাল মালিক। তবে সব পরিষেবা খুব শীঘ্রই চালু করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
গত ৫ অগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার পর থেকেই জম্মু কাশ্মীর কার্যত গোটা ভারতের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মোবাইল, ইন্টারনেট, কেবল, ল্যান্ডলাইন—সহ যোগাযোগের সমস্ত মাধ্যম বন্ধ করে উপত্যকায় জারি করা হয় কার্ফু। এখনও মোতায়েন রয়েছে ৫০ হাজারের বেশি অতিরিক্ত সেনা ও নিরাপত্তা কর্মী-অফিসার। কিছু কিছু অংশে ল্যান্ডলাইন পরিষেবা চালু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল, অভিযোগ কাশ্মীরিদের।
এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, আর কত দিন এ ভাবে প্রায় সমস্ত পরিষেবা বন্ধ রেখে বিচ্ছিন্নি করে রাখা হবে উপত্যকাকে। জবাবে সত্যপাল মালিক সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘যখনই জম্মু কাশ্মীরে কোনও সঙ্কট তৈরি হয়েছে, প্রথম সপ্তাহেই অন্তত ৫০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।’’ কিন্তু ৩৭০ অনুচ্ছেদ পর্বে এখনও পর্যন্ত উপত্যকার কোথাও এক জন মানুষেরও মৃত্যু হয়নি, দাবি করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল।
মৃত্যু আটকানো এবং ফোন চালুর তুলনা টেনে রাজ্যপালের যুক্তি, ‘‘ আমরা চাই এক জন মানুষেরও মৃত্যু যেন না হয়। তাতে ১০ দিনের জন্য যদি টেলিফোন বন্ধ থাকে, থাক। তবে আমরা শীঘ্রই এই সব সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করব।’’ অর্থাৎ, তাড়াতাড়ি মোবাইল-ল্যান্ডলাইন পরিষেবা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। জম্মু কাশ্মীরে রয়েছে মোট ৯৭টি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ। প্রশাসন সূত্রে খবর, তার মধ্যে ২৫টি এক্সচেঞ্জে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘খুব বিপদে আছি’, বিমানে রাহুলকে পেয়ে ক্ষোভে কেঁদে ফেললেন কাশ্মীরের মহিলা, দেখুন ভিডিয়ো
আরও পডু়ন: ইতিহাস! ব্যাডমিন্টনে দেশের প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, সিন্ধুপ্লাবনে হারিয়ে গেলেন ওকুহারা
এখনও জম্মু কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ অংশে কার্ফু জারি রয়েছে। যান ও সাধারণ মানুষের গতিবিধির উপর নিষেধাজ্ঞা বা নজরদারি রয়েছে অধিকাংশ জায়গায়। উপত্যকার মানুষের অভিযোগ, খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীতেও টান পড়ছে। রাজ্যপাল যদিও এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘কাশ্মীরে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বা ওষুধের কোনও ঘাটতি নেই। ঘটনা হল, ঈদের সময় আমরা বাড়ি বাড়ি মাংস, শাক-সবজি, ডিম পৌঁছে দিয়েছিলাম।’’ এর পর প্রশ্নকর্তা সাংবাদিকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘১০-১৫ দিনের মধ্যেই আপনার অভিমত পাল্টে যাবে।’’